সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমো’র নম্বর হ্যাক করে প্রবাসীদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। তারা মাদারীপুরে তৎপর একটি হ্যাকার চক্র থেকে হ্যাকিংয়ের কৌশল রপ্ত করে নওগাঁয় বসে চালাতো এই প্রতারণা কার্যক্রম।
দেশে এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে এই ইমো হ্যাকার চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগ।
রোববার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার প্রতারকরা হলেন- আব্দুল মমিন, রবিউল ইসলাম ওরফে রবি, শহিদুল ইসলাম ওরফে শহিদ, মো. সাব্বির, চান মোল্লা ও আরিফুল ইসলাম।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন ও হ্যাকিং-এর কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের ১৯টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
সোমবার রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুণ অর রশীদ৷
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি জানায়, গ্রেপ্তাররা অল্প শিক্ষিত হলেও তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইমো হ্যাক করায় বেশ দক্ষ। এই হ্যাকাররা ইমো হ্যাক করার প্রশিক্ষণ নেয় মাদারীপুরে তৎপর একটি চক্রের কাছ থেকে৷ বিনিময়ে তাদের দিতে হতো মোটা অঙ্কের টাকা।
ডিবির প্রধান বলেন, ৯ অক্টোবর রাতে নুরুল ইসলামের বড় ভাই কাতার প্রবাসী কাশেমের ইমো আইডি থেকে একটি মেসেজ আসে। তাতে বলা হয়, ‘আমার টাকার প্রয়োজন, আমি বিকাশ নম্বর পাঠাইলে টাকা দিও।’
১০ অক্টোবর দুপুরে নুরুল ইসলামের ইমো নম্বরে আরেকটি মেসেজ আসে, ‘আজকে বিকাশের রেট কত? ২৫ হাজার টাকা পাঠানো যাবে।’
এরপর আরও কয়েকটি মেসেজ ও ভয়েজ মেসেজ আসে।
তিনি বলেন, ভিকটিম নুরুল ইসলাম সেই মেসেজের ওপর ভিত্তি করে হ্যাকারদের দেয়া বিকাশ নম্বরে তিন বারে (২৫০০০+২৫০০০+১৫০০০) ৬৫ হাজার টাকা পাঠান। পরবর্তীতে নুরুল তার বড় ভাইয়ের ইমো আইডি বন্ধ পেলে তার ভাবির ইমো আইডি থেকে বড় ভাই আবুল কাশেমকে ৬৫ হাজার টাকা পাঠানোর কথা জানাযন। ওপাশ তেকে কাতার প্রবাসী কাশেম জানান, তার ইমো আইডি হ্যাক হয়েছে, আইডি তার নিয়ন্ত্রণে নেই। পরে ভিকটিম বুঝতে পারেন সুকৌশলে তার কাছ থেকে হ্যাকাররা টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ডিবি জানায়, একই কৌশল অবলম্বন করে গ্রেপ্তার হওয়া চক্রটি গত তিন মাসে পঞ্চাশ লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে। আর এই টাকা হাতিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রবাসীদের স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির প্রধান বলেন, ‘ইমো হ্যাক করার জন্য যারা প্রশিক্ষণ দেয় তাদের কয়েকজনকে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। তাদের আইনের আওতায় আনতে আমাদের টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি দ্রুতই তাদের আটক করা সম্ভব হবে।’