কুষ্টিয়া শহরের হাউসিং এলাকায় নিজ বাসা থেকে এক স্কুলশিক্ষিকার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
৫২ বছর বয়সী রোকশানা খানম কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ছিলেন।
শহরের হাউসিং এলাকার ডি-ব্লকে নিজেদের ৬ তলা বাসার দ্বিতীয় তলায় থাকতেন রোকশানা।
একই বাসার বাসিন্দা নিহত ব্যক্তির ভাতিজা মো. নির্ঝর বলেন, ‘আমরা চারতলায় থাকি। আমার ফুফু প্রতিদিন সকালে উঠে জানালা-দরজা খুলে রাখেন। কিন্তু আজকে দেখলাম খোলেননি। আমার ছোট ভাই একবার ডেকেছে, পরে আম্মু এসে ডেকেছেন। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’
সকাল সাড়ে ১০টায় ৯৯৯ নম্বরে কল করা হলে পুলিশের পরামর্শে দরজা ভেঙে রোকশানার ঘরে প্রবেশ করা হয় জানিয়ে নির্ঝর আরও বলেন, ‘আমরা দরজা ভেঙে দেখি ফুফুর গায়ের ওপর কাঁথা আছে, তবে মাথায় আঘাত করা, রক্তাক্ত।’
রোকশানাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে ধারণা তার স্বজনদের।
নিহত ব্যক্তির ভাতিজা বলেন, ‘বাসার মালামাল আসবাব সব এলোমেলো। ওনার কাছে তেমন একটা ক্যাশ টাকা থাকে না। আমার জানামতে, ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা ছিল। ডাকাতির ঘটনা না, মনে হয় কেউ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।’
রোকশানার স্বজনদের ধারণা, রাতের কোনো একসময় বারান্দার ওপরের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ঢুকে তাকে কেউ হত্যা করেছে।
রোকশানার স্বামী খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান যশোরে এলজিইডিতে চাকরি করেন। তিনি সেখানেই থাকেন। এই দম্পতির কোনো সন্তান নেই। রোকশানা একাই বাসার দোতলায় থাকতেন।
মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রোববার সন্ধ্যায় রোকশানা যশোর থেকে বাসায় এসেছিলেন। কারা কেন তার স্ত্রীকে হত্যা করতে পারে সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানা, ডিবি, সিআইডি, পিবিআই ও র্যাবের কর্মকর্তারা।পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), কুষ্টিয়ার পরিদর্শক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা যায়নি। তিনি যেহেতু একাই বাসায় ছিলেন, হত্যাকারী কীভাবে বাসায় ঢুকল এবং কীভাবে বের হলো এ তথ্য আমরা বের করার চেষ্টা করছি। আমাদের টিম কাজ করছে।’
রবিউল জানান, বেলা ১টার পর রোকশানার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেয়া হয়েছে।
দাফনের পর পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় মামলা দেয়া হবে বলে জানান নিহতের স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান।