সিলেটে বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যায় ৫ জন অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও দাবি কর্মকর্তাদের। তবে সোমবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ফুটেজ দেখে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, কামাল হত্যায় দুটি বাইকে করে ৫ জন অংশ নেয়।
‘কামাল নিজেই প্রাইভেট কার চালিয়ে বড়বাজারের গলির ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় একটি বাইকে করে ৩ জন পেছন থেকে তাকে অনুসরণ করতে থাকে। গোয়াইপাড়া এলাকায় আসা মাত্র আরেকটি বাইক তার প্রাইভেট কারের গতিরোধ করে। এসময় দুই বাইকের ৫ জন নেমে তাকে ভেতরে চালকের আসনে বসা অবস্থাতেই এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন।’
হত্যার ঘটনা তদন্তে থাকা পুলিশের আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হত্যাকারীদের কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কামালের ময়নাতদন্ত সোমবার দুপুরে হয়েছে জানিয়ে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল জাকির বলেন, ‘জানাজা শেষে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। আমরা সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসবাদ করছি। তবে কাউকেই এখনও আটক দেখান হয়নি।’
কামাল হত্যার পর রোববার রাতে বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি। রাতের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে সকালে কঠোর কর্মসূচির হুমকিও দেন নেতারা।
বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল। ছবি: সংগৃহীত
এ ব্যাপারে সোমবার দুপুরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘কামালের জানাজা ও দাফন হবে। আমরা এখন এসব নিয়ে ব্যস্ত আছি। দাফন শেষে সবাই বসে কর্মসূচি নির্ধারণ করব।’
নগরের বড়বাজারে রোববার রাত ৯টার দিকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন কামাল। তিনি ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক। তার বাড়ি নগরের সুবিদবাজার এলাকায়।
ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
লাহিন এয়ার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ট্র্যাভেলস ও রিক্রুটিং এজেন্সি আছে কামালের।
ওসমানী মেডিক্যালে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কামালের ভাই ময়নুল হক। ছবি: নিউজবাংলা
উপকমিশনার আজবাহার আলী রোববার রাতে বলেন, ‘নিহত কামালের ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা ছিল। ব্যবসা নিয়ে নগরীর কয়েকজনের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরে গত ১৫ অক্টোবর নগরীর জিন্দাবাজার এলাকার আল মারজান শপিং সেন্টারের সামনে দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
‘হাতাহাতির পরদিন কামালসহ কয়েকজনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন আজিজুর রহমান সম্রাট নামের এক ব্যক্তি। নগরের বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা এই সম্রাট। হত্যাকাণ্ড ওই এলাকাতেই ঘটেছে। আমরা ধারণা করছি, ব্যবসাসংক্রান্ত পূর্ববিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে।’
কামালের ভাই ময়নুল হক বলেন, ‘আমার ভাই রাজনীতি করত। ব্যবসাও ছিল তার। তবে কারও সঙ্গে বিরোধ ছিল কি না আমার জানা নেই। তবে যারাই হত্যা করুক, আমি ন্যায় বিচার চাই।’