বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইভিএমের ভোট পুনর্গণনা: চার কেন্দ্রের অডিট কার্ড গায়েব

  •    
  • ৬ নভেম্বর, ২০২২ ২১:৫৩

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘সিলগালা বস্তা থেকে অডিট কার্ড গায়েব হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ওই বস্তা প্রিসাইডিং অফিসার দিয়েই খুলতে হয়। যদি কার্ড হারিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব। এটা মোটেও স্বাভাবিক নয়, অস্বাভাবিক ঘটনা।’

আদালতের আদেশে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) একটি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের ফল পুনর্গণনা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়েছিল।

ইভিএমে অনুষ্ঠিত কোনো ভোট সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের আদেশে এবারই প্রথমবারের মতো পুনরায় গণনা করেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বের কমিশন। সেখানে ৫৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে চারটি কেন্দ্রের অডিট গায়েব হয়ে গেছে।

অডিট কার্ড না পাওয়ায় ভোটের দিন প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দেয়া ফলের সঙ্গে প্রতিটি ভোটার শনাক্ত করার যে তথ্য সংরক্ষিত ছিল সেগুলো পুনরায় পরীক্ষার সুযোগ পায়নি কমিশন।

যদিও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের আদেশে ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের ভোট পুনর্গণনা করা হয়েছে।’

অডিট কার্ড গায়েব হয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে করছেন না নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সিলগালা করা বস্তা থেকে অডিট কার্ড গায়েব হওয়ার সুযোগ নেই। যদি হয়ে থাকে সেটা আমরা তদন্ত করে দেখতে পারি।’

ভোট পুনর্গণনা কমিটির প্রধান ও নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) মহাপরিচালক মো. আবদুল বাতেন বলেন, ‘অডিট কার্ড গায়েব হওয়ার বিষয়টি ইচ্ছাকৃত হতে পারে। আবার প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ভুলেও হতে পারে।’

এদিকে চারটি কার্ড গায়েব হয়ে যাওয়ায় ভোটের একই ফল দু’বার গুনেছেন ইসির কর্মকর্তারা।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন নিয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা হলে আদালত ফল পুনরায় গণনার আদেশ দেয়। আদালতের আদেশের পর কমিশন পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট ফল পুনর্গণনা সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়।

অডিট কার্ড গায়েব হওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ইনফরমেশন আমাদের কাছে নেই। সিলগালা করা বস্তা থেকে অডিট কার্ড গায়েব হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি হয়ে থাকে সেটা আমরা তদন্ত করে দেখতে পারি।

‘ওই বস্তা প্রিসাইডিং অফিসার দিয়েই খুলতে হয়। যদি কার্ড হারিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব। এটা মোটেও স্বাভাবিক নয়, অস্বাভাবিক ঘটনা।’

এ ঘটনায় ইভিএম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটি দুটি ভুল হতেই পারে। আবার সবাই যে ভাল লোক তাও তো নয়। খারাপ লোক দুই-একজন। তার মানে এই নয় যে বাংলাদেশের সব লোক খারাপ। দুই পক্ষের প্রার্থী, এজেন্ট সবার সামনেই কমিটি কাজ করেছে। রিপোর্টটা তো আদালতে যাবে। আদালত নিশ্চয় এর ওপর একটা আদেশ দেবে।’

অডিট কার্ড হারিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান ও ইটিআই মহাপরিচালক মো. আবদুল বাতেন বলেন, ‘সিলগালা করা বস্তায় অডিট কার্ড, প্রিসাইডিং অফিসারের রেজাল্ট শিট ও ইভিএম থেকে বের হওয়া ফলের প্রিন্ট কপি থাকবে এটাই নিয়ম।

‘কোর্টের আদেশ অনুসারে আমরা সিলগালা করা বস্তাগুলো প্রিসাইডিং অফিসার ও প্রার্থীদের সামনেই খুলেছি। তিনটি বা চারটি অডিট কার্ড মিসিং আছে। তবে ওখানে আবার প্রিসাইডিং অফিসারের যে রেজাল্ট শিট, সেটা ছিল এবং ইভিএম থেকে ফলের যে প্রিন্ট কপি থাকে, ভোটের দিন যেটা বস্তার ভেতর দিয়েছিল সেটা পেয়েছি। সবাই সামনেই ওটা কাউন্ট করেছি।’

তিনি বলেন, ‘কোর্ট যে আদেশ দিয়েছে তাতে আমাদের কাজ হল, যে ফাইন্ডিংস পেয়েছি তা দাখিল করা। আমরা যেটা পেয়েছি বা যেটা পাইনি হুবহু তা কমিশন ও কোর্টে দাখিল করব। কোর্ট ফাইনাল সিদ্ধান্ত দেবে।’

তাহলে তো কেন্দ্রের ফল আপনারা পুনর্গণনা করতে পারেননি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তো গণনা করিনি। অডিট কার্ড পাইনি, এটি আমরা ফাইন্ডিংস দেব। তবে শুধু অডিট কার্ড দিয়ে পুনর্গণনা হয় না। যেখানে অডিট কার্ড পেয়েছি, সেখানে অডিট কার্ডের তথ্য নিয়েছি। ইভিএমের প্রিন্টেট কপি এবং প্রিসাইডিং কর্মকর্তার স্বাক্ষর করা ফলের কপিও নিয়েছি। আর যেটার অডিট কার্ড পাইনি, সেখানে বাকি দুটির ফল মিলিয়ে দেখেছি।’

অডিট কার্ড ছাড়া বিষয়টি স্বচ্ছ হলো কিনা জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘স্বচ্ছতার বিষয়টি কোর্ট বলবে।’

আবদুল বাতেন বলেন, ‘এটি প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ভুল হতে পারে। আবার ইনটেনশনালিও হতে পারে। কিন্তু বস্তাগুলো সিলগালা ছিল। আমাদের কমিটির কাজ হলো যা যা পেয়েছি তা দেব। এরপর আইন অনুযায়ী কোর্ট সিদ্ধান্ত দেবে।

‘৫৪টি কেন্দ্রে ৫৪ জন প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন। একজন প্রিসাইডিং অফিসার যেমন বলেছেন- অডিট কার্ড বস্তার ভেতরে দেয়ার জন্য তাকে বলা হয়নি। বাকিরা দিয়েছেন জানালে তিনি আর কিছু বলতে পারেননি।’

এ বিভাগের আরো খবর