সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকা থেকে এক দম্পতির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার বেলা ১১টার দিকে দুটি কক্ষ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধারের সময় মায়ের পাশে বসে কান্নারত অবস্থায় শিশুপুত্রকেও উদ্ধার করা হয়।
ওই দুজন হলেন রিপন তালুকদার ও শিপ্রা তালুকদার, যাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে। রিপন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাঠানটুলা এলাকার একটি বাসায় একমাত্র সন্তান ঋত্বিক তালুকদারকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন রিপন ও শিপ্রা। রোববার সকালে ঘর থেকে ঋত্বিকের কান্নার শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেন, তবে অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরও ভেতর থেকে দরজা না খোলায় তারা পুলিশকে খবর দেন। পরে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থায় দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করে।
প্রতিবেশী শিল্পী সরকার বলেন, ‘প্রায় সাত মাস ধরে তারা পাঠানটুলা এলাকার এই বাসায় ভাড়া থাকতেন। কখনও ঝগড়া-বিবাদ শুনিনি। আজ সকাল ৯টার দিকে ঘরে শিশুটির কান্না শুনতে পান প্রতিবেশীরা।
‘এরপর বাইরে থেকে তারা অনেক ডাকাডাকি করেন, কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে জানানো হয়।’ এসএমপির জালালাবাদ থানার পুলিশ ঘরের জানালা খুলে দুই কক্ষে দুজনের মরদেহ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় দেখতে পায়। শিপ্রা দাসের ভাই নিবারণ দাস অভিযোগ করেন, ‘আমার বোনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ভগ্নিপতি রিপন আত্মহত্যা করেছে।’ এমন অভিযোগ অস্বীকার করে রিপনের চাচাতো ভাই অনুকূল তালুকদার বলেন, ‘কী কারণে তারা আত্মহত্যা করেছেন, তা আমরা বুঝতে পারছি না।’ এদিকে বাসার ভেতর থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ। এতে লেখা ছিল,‘'আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছি, তোমরা আমার সন্তানকে খেয়াল রেখো।’ চিরকুটটি কার লেখা, তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘গত রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। সকাল ৯টার দিকে ঘরের ভেতর থেকে শিশুর কান্না শুনতে পাওয়া যায়। পারিবারিক কলহের কারণেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করছি।’তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শিশুটিকে তাদের আত্মীয়দের জিম্মায় দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’