বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতির বিধান বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি

  •    
  • ৬ নভেম্বর, ২০২২ ১১:২১

রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। 

সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি নেয়ার বিধান বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছে আপিল বিভাগ।

একই সঙ্গে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত থাকবে বলে আদেশও দিয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও মনজিল মোরসেদ।

পরে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। আদালত আপিল দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে আদালত আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে দিয়েছেন। এর ফলে সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতির বিধান আপাতত বহাল থাকল।’

তিনি বলেন, ‘এখন আপিল বিভাগের রায়ের ওপর নির্ভর করবে এ আইন থাকবে কী থাকবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আপিল নিষ্পত্তি না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ধরে নিতে হবে আইনটি বহাল আছে।’

সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি নেয়ার বিধান বাতিল করে গত ২৫ আগস্ট রায় দেয় হাইকোর্ট। সে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে হাইকোর্ট তার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে।

১৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকারের পূর্বানুমতি নেয়ার বিধান বাতিল করার কারণ ব্যাখ্যা করে আদালত তার রায়ে বলেন, ‘ফৌজদারি আইনে বলা আছে, এ আইন সবার জন্য সমান। যেকোনো লোকের জন্যই সমান। এই ধরনের সুরক্ষা কোনো একটা গ্রুপকে দেয়া ঠিক হয়নি। এ জন্য আদালত বিধানটি বাতিল ঘোষণা করেছেন।’

রায়ে আদালত বলেছে, ‘আমাদের দেশে সাধারণত ফৌজদারি মামলায় এমনিতেই তদন্তে দীর্ঘ সময় লাগে। এমনকি বছর বছর ধরে চলে। এর মধ্যে যদি এই বিধান যুক্ত করা হয়, তাহলে সেই তদন্ত আর শেষ হবে না।’

রায়ে আরও বলা হয়, সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বলা আছে, সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিক দায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। আর সরকারি চাকরিজীবীরা কর্মরত অবস্থায় কোনো ফৌজদারি মামলায় জড়ালে তার দেখভালের দায়িত্ব সরকারের। সুতরাং এ অবস্থায় নতুন করে এ বিধান যুক্ত করার দরকার নেই।

রায়ে আদালত বলে, সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর ৪১ (১) ধারা বেআইনি, সংবিধান ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি।

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪১ (১) ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না এবং সংবিধানের ২৬ (১) (২), ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর রুল জারি করে হাইকোর্ট।

২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইনের গেজেট জারি করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক গেজেটে বলা হয়, ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকরের কথা রয়েছে।

আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়, কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে করা ফৌজদারি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেপ্তার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে।

২০১৮ সালের নভেম্বরে আইনটি করা হয়। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হয়। এ অবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধাসংক্রান্ত আইনের ৪১ (১) ধারাটি সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ পরিপন্থি উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর রুল জারি করে। পরে রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষে আইনটি বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয় উচ্চ আদালত।

এ বিভাগের আরো খবর