কখনো আরমান, কখনো মুশফিকুর রহমান পরিচয়ে সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা, ঠিকাদার বা ব্যবসায়ী সেজে প্রতারণার অভিযোগে নাজমুল হোসেন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির বাড়ি পিরোজপুরের আদর্শপাড়ায়।
নাজমুল এখন পর্যন্ত বিভিন্ন পরিচয়ে ২৩টির বেশি প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানিয়েছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, মোহাম্মদপুরের টাউনহলে ফোরজি লাইট হাউজের একটি ইলেক্ট্রনিক পণ্যের দোকানে আরমান নামের একব্যক্তি ঠিকাদারের পরিচয় দেন। পরে দুই-একদিনের মধ্যে ১১ লাখ টাকার পণ্য নেয়ার কথা বলেন। এর দুদিন বাদে সকালে তিনি ওই দোকানের মালিককে ফোন দিয়ে বেশকিছু পণ্য ভাষানটেকের ঠিকানায় সরবরাহের কথা বলেন। কথা মতো ৭ লাখ ৩৯ হাজার ৩৪০ টাকার মালামাল দুইজন কর্মচারীসহ পিকআপে করে পাঠিয়ে দেন।
পণ্য পেয়ে আরমান নামের ওই ব্যক্তি সেগুলো আরেকটি ইলেকট্রিক দোকানে ডিসকাউন্টে বিক্রি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ফোরজি লাইট হাউজের মালিক মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, পরে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনায় জড়িতকে শনাক্ত করে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি নম্বরবিহীন প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।
পরে ডিএমপির নিজস্ব আসামি শনাক্ত সফটওয়্যারে ফিঙ্গার দিলে তার প্রকৃত নাম নাজমুল হোসেন বলে জানা যায়। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ড্রাইভিং লাইসেন্সে তার নাম আবার মুশফিকুর রহমান।
প্রতারণার বর্ণনা দিয়ে ওসি বলেন, ‘তিনি কখনো জাতীয় পরিচয়পত্র, কখনো বা জন্মসনদ ব্যবহার করে ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, পাসপোর্ট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করেছেন। এরপর পরিস্থিতি বুঝে কখনো সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা, কখনো ঠিকাদার বা কখনো ব্যবসায়ী সেজে প্রতারণা করেছেন। এ কাজে মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য সে প্রাইভেটকারটি ব্যবহার করে।’
এছাড়া নাজমুল ‘রয়েল এআরকে গ্রুপ’ নামে ভুয়া ফেসবুক পেইজে ইলেকট্রিক পণ্যের বিজ্ঞাপন দেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে ২৩টির বেশি প্রতারণা করেছে বলে স্বীকার করেছেন।
মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার নাজমুল এখন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের আদেশে হেফাজতে রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।