বরিশালে বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি অবস্থান ও কর্মসূচিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন দাবিতে সেখানে দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘটে রিকশাভ্যানই এখন যাতায়াতের একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে শহরটির জনসাধারণের জন্য।
শনিবার ভোর থেকেই দেখা যায় রিকশাভ্যানে চড়েই বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে হচ্ছে কর্মজীবীদের। এদিন স্বাভাবিকের তুলনায় কম দেখা গেছে বরিশালের সড়কে মানুষের আনাগোনা। খোলা হয়নি বেশির ভাগ দোকানপাট।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি মিছিল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মধ্য দিয়ে নগরীতে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। রাজনৈতিক দলগুলোর এমন কর্মসূচির ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন এমন অনেকে ক্ষোভ জানিয়েছেন নিউজবাংলাকে।
নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে যাত্রী মইদুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই দলের ঝামেলায় ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। আমরা তো কোনো দোষ করিনি। আপনারা রাজনীতি করছেন করেন, কিন্তু আমাদের কেন শাস্তি দিচ্ছেন।’
অটোচালক ফয়সাল মৃধা বলেন, ‘আমরা দিন আনি, দিন খাই। দুই দিন ধরে ঘরে বইয়া রইছি। কালকে গাড়ি বাইর করছিলাম, পরে আবার নেতাগো ধাওয়ানিতে ঘরে ঢুকছি। আমাগো ঘরে এই দুই দিন তো আওয়ামী লীগ বা বিএনপি খাওন দিয়া গেল না। জনগণের পেটে লাথি মাইরা তো রাজনীতি হয় না।’
চাকরিজীবী সুলভ মজুমদার বলেন, ‘বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জব করার কারণে শনিবারও অফিস করতে হয়। আর যানবাহন না পেয়ে বৈদ্যপাড়া থেকে রুপাতলী যাচ্ছি ভ্যানে করে। নগরীতে কোনো রিকশা, অটো সিএনজি কিছু নেই। এখন ভরসা ভ্যান।’
এদিকে সকালে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ ও নদীবন্দরে যাত্রীদের যানবাহনের জন্য অপেক্ষায় করে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে আরেক যাত্রী বাপ্পী খান বলেন, ‘খুব জরুরিভাবে আগৈলঝাড়া যাওয়া প্রয়োজন। তবে ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স আর বড় বড় ট্রাক ছাড়া কিছুই চলছে না। কী করব বুঝতে পারছি না। আমার মতো অনেক লোক কাউন্টারের সামনে বসে আছে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, ‘আমাদের আজকের সমাবেশ ঠেকাতে জনগণকেও ভোগান্তিতে ফেলেছে সরকার ধর্মঘট ডেকে। জনগণের ভোগান্তি করে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না।’
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গাজী নইমুল হোসেন লিটু বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘটের সাথে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটা তাদের রুটি রুজির ব্যাপার।’