নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাত্রদলের মশাল মিছিলের শেষ পর্যায়ে হামলায় গুরুতর আহত অমিত হাসান অনিক নামের ছাত্রদলের এক কর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৬ জন।
ছাত্রদলের নেতাদের দাবি, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা, রামদা ও রড নিয়ে মশাল মিছিলের শেষ পর্যায়ে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভুলতা এলাকায় মশাল মিছিল করে উপজেলা ছাত্রদল। মিছিল শেষে নেতা-কর্মীরা বাড়ি ফিরবেন ঠিক এমন সময় ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহত ১৬ বছর বয়সী অমিত হাসান অনিক কাঞ্চন পৌরসভা ছাত্রদলের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সহসভাপতি। তিনি উপজেলার চরপাড়া এলাকার আমীর হোসেনের ছেলে ও স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র।
এ ঘটনায় আহত ৬ জন হলেন আবু হানিফ, অপু মিয়া, আমির হোসেন, আব্দুল হালিম, মো. সানি ও রাশেদুল মোল্লা।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি নিউজবাংলাকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় অমিত হাসান অনিকের। নিহতের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। রূপগঞ্জ থানা পুলিশকেও ঘটনা জানানো হয়েছে।
মশাল মিছিলে নেতৃত্ব দেয়া রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাহিদ হাসান বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতিবাদে রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদল রাত ৮টার দিকে মশাল মিছিল বের করে। মিছিলের শেষের দিকে যখন নেতা-কর্মীরা বাড়ির দিকে ফিরবেন তখনই স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের লোকজন পেছন থেকে হামলা চালায়। তারা লোহার রড দিয়ে অনিককে পিটিয়ে রাস্তার ওপর চলমান গাড়ির দিকে ফেলে দেয়। মারধর করা হয় আরও অনেককে। পরে আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকায়।’
আহত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে হাসপাতালে থাকা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, ‘অনিককে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে আমাদের সহকর্মী।
মশিউর রহমান রনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা, রামদা ও রড নিয়ে পেছন থেকে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ সময় ছাত্রদল নেতা অনিককে হত্যা করেছে। আরও ছয় নেতা-কর্মীকে আহত করেছেন। হামলা চালিয়ে বিএনপির কর্মসূচি থামানো যাবে না।’
নিহত ছাত্রদল নেতা অনিকের স্বজনরা জানান, সন্ধ্যার আগে বাসা থেকে বের হয় অনিক। পরে তারা ফোনে জানতে পারে হাসপাতালে অনিক মারা গেছেন। অনিকের মৃত্যুর খবর শুনে তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনিকের লাশ মর্গে রাখা রয়েছে।’
তবে ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।