বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অস্তিত্বহীন বৈরাবরী পার্টির নিবন্ধনের আবেদন

  •    
  • ২ নভেম্বর, ২০২২ ২৩:৫৬

সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করা সিরাজী সৈয়দ মনোয়ার হোসেন বৈরাবরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৈরাবরী সংগঠন ও আমাকে সভাপতি করার বিষয়ে কিছু জানি না। মুখপাত্র উল্লেখ করে নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদনকারী আলমগীরের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছে।’

সংগঠনের কোনো অস্তিত্ব নেই। তবু মুখপাত্র সেজে ‘বৈরাবরী পার্টি’ নামে নিবন্ধন চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পীর সৈয়দ আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি।

দলীয় কার্যালয় নেই, প্যাড নেই; জেলা ও উপজেলা কমিটির কোনো অস্তিত্ব নেই। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে যার নাম রয়েছে সেই সিরাজী সৈয়দ মনোয়ার হোসেন বৈরাবরীও জানেন না। অথচ পীর সৈয়দ আলমগীর বৈরাবরী পার্টির যুগ্ম সম্পাদক ও মুখপাত্র হয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন।

পীর সৈয়দ আলমগীরের বাড়ি উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুরিপাড়া গ্রামে। বুধবার উপজেলার হাঁটুভাঙ্গা বাজারে তার সঙ্গে নিউজবাংলার কথা হয়। আর তখনই নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করা বৈরাবরী পার্টির অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়।

এই পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হচ্ছেন ছয়জন। সভাপতি হিসেবে নাম দেয়া হয়েছে সিরাজী সৈয়দ মনোয়ার হোসেন বৈরাবরীর। প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে রয়েছেন রওশন বৈরাবরী। এছাড়া ভাইস প্রেসিডেন্ট পীরজাদা আব্দুল আলীম অভি, প্রধান উপদেষ্টা পাবেল বৈরাবরী ও উপদেষ্টা তানজিন বৈরাবরী। আর যুগ্ম সম্পাদক ও দলীয় মুখপাত্র হিসেবে রয়েছেন পীর সৈয়দ আলমগীর। মুখপাত্র ছাড়া সবার বাড়িই গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বৈরাবর গ্রামে।

সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করা সিরাজী সৈয়দ মনোয়ার হোসেন বৈরাবরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৈরাবরী সংগঠন ও আমাকে সভাপতি করার বিষয়ে কিছু জানি না। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আলমগীরের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছে। তাই কুড়িপাড়া এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আলমগীরকে নিরুৎসাহিত করার অনুরোধ করছি।’

দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নাম উল্লেখ করা পীরজাদা আব্দুল আলীম অভি বৈরাবরী বলেন, ‘সৈয়দ আলমগীর আমার মুরিদ। সে বৈরাবরী পার্টি নামে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে তা জানি। তবে আমি কোথাও কোনো কাগজে স্বাক্ষর করিনি।’

আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেদার টেকনোলজিতে বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেছি। পরে মির্জাপুরের বংশাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে কিছুদিন শিক্ষকতা করেছি। বর্তমানে কোনো পেশার সঙ্গে জড়িত নই। দল গোছানোর চেষ্টা করছি।’

তিনি জানান, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের উপনির্বাচনে তিনি বৈরাবরী পার্টি থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। কিন্তু দলের নিবন্ধন না থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে আলমগীর বলেন ‘তরিকার পাশাপাশি জনসেবাই আমাদের দলের আদর্শ। দলের আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই। তবে ব্যাংক হিসাব আছে। আমাদের মূল সম্পদ বৈরাবরী পীরের ভক্তবৃন্দ। কম্পিউটারে টাইপ করা দলীয় গঠনতন্ত্র থাকলেও মেনিফেস্টো নেই।’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে তাদের দল এককভাবে তিনটি আসনে ভোটে অংশ নেবে। আসন তিনটি হল টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) ও গাজীপুরের দুটি আসন। আর বিএনপি নির্বাচনে এলে তাদের দল তাদেরকে সমর্থন দেবে।

তিনি বলেন, অর্থের অভাবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয় নিতে পারিনি। তাই মির্জাপুরের কুড়িপাড়া নিজ বসতবাড়ির ঠিকানা দিয়ে দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছি। দলের স্লোগান হচ্ছে- ‘বৈরাবরী জিন্দাবাদ’। ইসিতে দলীয় প্রতীক হিসেবে চাওয়া হয়েছে হৃৎপিণ্ড।

বৈরাবরী পার্টি সম্পর্কে কথা হয় হাঁটুভাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী মনিন্দ্র কর্মকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বৈরাবরী পার্টির কথা শুনেছি, কিন্তু কোনো কার্যক্রম দেখা যায় না।’

বেলতৈল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, ‘আলমগীরকে অনেক দিন ধরেই চিনি। সে মেধাবী ছাত্র ছিল। আচার-ব্যবহারও ভাল। ইদানীং সে বৈরাবরী নামে একটি রাজনৈতিক দল নিয়ে কাজ করছে।’

আজগানা ইউনিয়ন বিএনপির নেতা হায়দারুজ্জামান সরকার বলেন, ‘বৈরাবরী পার্টির আলমগীরকে আমি চিনি না। এই পার্টির কোনো কার্যক্রমও চোখে পড়েনি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সস্পাদক এবং কুড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এম এ কদ্দুছ বলেন, ‘সৈয়দ আলমগীর ইদানিং বৈরাবরী পার্টির নামে যেসব কার্যক্রম চালাচ্ছেন তাতে মনে হয় তার মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর