বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বগুড়া বিএনপি: ১১ বছর পর কারা হচ্ছেন দুর্গের কান্ডারি

  •    
  • ১ নভেম্বর, ২০২২ ২০:২৩

বর্তমানে বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম। বুধবারের সম্মেলনে তিনিই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক।

দীর্ঘ ১১ বছর পর বুধবার বিএনপির দুর্গখ্যাত বগুড়ায় সম্মেলন হচ্ছে। আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই গোপন ব্যালটে জেলা বিএনপির কান্ডারিদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন দলীয় ভোটাররা।

সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

দল থেকে দূরে থাকা ত্যাগী নেতারা মনে করছেন, ভোটের মাধ্যমে এই সম্মেলনে সঠিক নেতৃত্ব বের হয়ে আসার সুযোগ তৈরি হবে।

সংগঠনের নেতারা জানান, সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ১১টি উপকমিটি করা হয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও তারা দেশে মডেল তৈরি করবেন।

জেলা বিএনপি কার্যালয় সূত্র জানায়, সম্মেলনে দুটো প্যানেল রয়েছে। ছাতা প্রতীক নিয়ে একটি প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম। মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে এই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এম আর ইসলাম স্বাধীন।

অপর প্যানেলটিতে আনারস প্রতীকে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা। আর রিকশা প্রতীকে এই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী আজগর তালুকদার হেনা। এই প্যানেলের বাদশা বর্তমানে বগুড়া পৌরসভার মেয়র। আর হেনা বগুড়া সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান।

এ ছাড়া সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল দেয়াল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে সভাপতি পদে লড়ছেন।

সাংগঠনিক সম্পাদকের তিন পদে ১১ জন হলেন জেলা শ্রমিক দলের সহসভাপতি মোশারফ হোসেন স্বপন (সিএনজি অটোরিকশা), আবদুল আজিজ হীরা (আম), সহিদ-উন-নবী সালাম (কাপ-পিরিচ), এ বি এম মাজেদুর রহমান জুয়েল (বই), শেখ তাহাউদ্দিন নাইন (গোলাপ ফুল), জাহিদুল ইসলাম হেলাল (টিউবওয়েল), কে এম খায়রুল বাশার (মই), মিজানুর রহমান রাজা (কলস), শহিদুল ইসলাম সহিদ (মাইক), আলী হায়দার তোতা (চশমা) ও সোলায়মান আলী (বালতি)।

জেলা বিএনপির প্রকাশিত তালিকায় ২২টি ইউনিটে মোট ভোটার রয়েছেন ২ হাজার ২২ জন। তারাই গোপন ব্যালটে প্রার্থীদের মাঝে পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।

তবে নির্বাচনী কার্যক্রমের শুরুতেই ভোটার তালিকায় অনেক ত্যাগী নেতার বাদ পড়া নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিষয়টিকে নিছক ভুল হিসেবে উপস্থাপন করে নিজেদের ব্যর্থতার দায় এড়াচ্ছেন।

নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দলের ভেতরে গ্রুপিং ও ভোটের মাঠে কর্তৃত্ব রাখতে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কৌশল নেয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন কমিটি গঠনে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির ঘাটতি থাকবে বলে তারা মনে করেন। এসব সমালোচনার পরও বিএনপির প্রার্থীরা ভোটের মাঠে লড়ছেন। নেতা-কর্মীদেরও ব্যাপক আগ্রহ এই সম্মেলন নিয়ে।

নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমানে জেলা শহরজুড়ে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে- ‘কারা হচ্ছেন বগুড়া বিএনপির কান্ডারি’।

ভোটার তালিকায় বাদ পড়া জয়নাল আবেদীন চাঁন বলেন, ‘আমি ভোট দিতে না পারলেও সম্মেলন কিংবা দলের বিপক্ষে নই। সাধারণ নেতা-কর্মীরা যাকে মূল্যায়ন করবে তিনিই নির্বাচিত হবেন। আমার পক্ষে-বিপক্ষে বলার কিছু নেই। কারণ, এ ভোট ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব নিজে দেখবেন।’

বর্তমানে বহিষ্কৃত ও বগুড়া যুবদলের সাবেক সভাপতি সিপার আল বখতিয়ার বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন নিঃসন্দেহে সুন্দর ব্যবস্থাপনা। তবে ভোটে দুই নম্বরি যাতে না হয়, সে বিষয়টি দেখতে হবে।’

বর্তমানে বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম। তিনিই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক।

দুর্গখ্যাত বগুড়া জেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে সাইফুল বলেন, ‘দলের সব স্তরের নেতা-কর্মী, ডেলিগেট, কাউন্সিলর এবং কর্মী-সমর্থক সবাইকে নিয়ে এই সম্মেলন সফল করার চেষ্ট করব। আশা করছি, বগুড়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন দেশের মধ্যে একটি মডেল সম্মেলন হবে।’

১৯৯৯ সালে বিএনপিতে প্রথম গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের পক্রিয়া বগুড়া থেকেই শুরু হয়। তখন বগুড়ার অনুকরণে দেশের অন্য জেলাগুলোতেও গোপন ব্যালটে বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচন হয়। তারপর থেকেই বগুড়ার নেতা নির্বাচনের ভোটের এই পদ্ধতিকে মডেল হিসেবে ধরা হতো।

তবে পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালের ৭ এপ্রিল কোনো সম্মেলন ছাড়াই বগুড়ায় জেলা বিএনপির সর্বশেষ কমিটি গঠন হয়। ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর ১৭২ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন করা হয়।

এই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায় ২০১৫ সালে। এরপর নতুন করে আর সম্মেলন না হওয়ায় বগুড়া বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ বিরোধ দেখা দেয়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে তখনকার জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল নিজ অনুসারীদের নিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এখানেও ঝামেলা হয়েছিল।

পাল্টাপাল্টি আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে একই বছর ১৫ মে বগুড়া-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজকে প্রধান করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এতে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই ঘটনায় পর ১৬ নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের ১৩ নভেম্বর জেলা বিএনপির আহ্বায়কের পদ থেকে গোলাম মো. সিরাজকে সরিয়ে বগুড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র রেজাউল করিম বাদশাকে আহ্বায়ক করা হয়। নির্বাচনকে সামনে রেখে বাদশা পদত্যাগ করলে আহ্বায়ক হন অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম।

এ বিভাগের আরো খবর