‘একটা সময়ে দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর কেটে দেয়া হতো। তবে বর্তমানে মিডিয়া সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মিডিয়া জগৎ আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। সবার জন্য উন্মুক্ত করে রেখেছি।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এসব কথা বলেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ কার্যালয়ের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে দৈনিক বাংলার সহযোগিতায় মঙ্গলবার এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর-এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ও দৈনিক বাংলার প্রকাশক চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
এ বছর প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া মিলে তিন ক্যাটাগরিতে ১০ জন ও মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে ১ জনকে পুরস্কার দেয়া হয়।
ডিআরইউ কার্যালয়ে মঙ্গলবার বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। ছবি: নিউজবাংলাঅনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকরা জানা-অজানা অনেক কিছু আমাদের সামনে নিয়ে আসেন মিডিয়ার মাধ্যমে। মিডিয়া জগৎটাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। সবার জন্য উন্মুক্ত করে রেখেছি। এখন খবর প্রকাশ হলে সেই খবর আমরা কেটে দিই না। মিডিয়া সম্পূর্ণ স্বাধীন ও দুঃসাহসিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যেখানে গিয়েছি সেখানেই মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি দেখেছি। এতে এটাই প্রমাণ হয়, বাংলাদেশের সব স্থানে তাদের বিচরণ আছে। দেশের আনাচকানাচে যখন যা হচ্ছে সেই খবর সঙ্গে সঙ্গে সবার সামনে চলে আসছে, তা অনলাইন মিডিয়া বলুন আর ইলেকট্রনিক মিডিয়া বলুন।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘মিডিয়া চ্যালেঞ্জিং জগৎ। এই জগৎকে আরও আলোকিত করতে হবে। প্রতিদিনের ঘটনা যেমন লেখেন তেমনি পজিটিভ নিউজগুলো সমানভাবে লিখবেন। সব সময় আপনাদের সঙ্গে আছি, থাকব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকরা দুঃসাহসিক কাজ করে যাচ্ছেন। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের নানামুখী প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়। সব সময় সাংবাদিকদের পাশে থেকে সেগুলো সমাধান করে যাচ্ছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সেই সহযোগিতা যখন যেভাবে চাচ্ছেন আমরা করে যাচ্ছি।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের সব সময় একটা নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল।
‘বঙ্গবন্ধু নিজেও রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় অন্য সব দায়িত্বের পাশাপাশি সাংবাদিকতার মতো মহান পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। ১৯৭২ সালে তার সরাসরি উৎসাহে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা হিসেবে তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান নাম বদলে দৈনিক বাংলা নামে প্রকাশিত হয়।’
ডিআরইউ কার্যালয়ে মঙ্গলবার বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নিউজবাংলা-এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ও দৈনিক বাংলার প্রকাশক চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। ছবি: নিউজবাংলামরহুম সাংবাদিক তোয়াব খানের প্রসঙ্গ টেনে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘২০২২ সালে আমরা যখন নতুন করে দৈনিক বাংলার প্রকাশনা শুরু করি তখন আমাদের সাহস দিয়ে এই পত্রিকার সম্পাদক হয়ে সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি সাংবাদিক। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই। এই মাহেন্দ্রক্ষণে সর্বজন শ্রদ্ধেয় তোয়াব খানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
‘যারা ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তারা বর্তমান সময়ে সাহসী ও স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতীক। স্বাধীন সাংবাদিকতার এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সাংবাদিকদের এই যাত্রায় আমরা সব সময় পাশে থাকতে চাই।’
ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব।
যারা পুরস্কার পেলেন
২০২২ সালে প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক সমকালের প্রতিবেদক আবু যর আনছার উদ্দীন আহাম্মদ (রাজীব আহাম্মদ)। দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক শেয়ার বিজের প্রধান প্রতিবেদক মো. ইসমাইল আলী। যৌথভাবে তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ডেইলি স্টারের জামিল খান ও দৈনিক সমকালের ওবায়দুল্লাহ রনি।
অনলাইন মিডিয়ায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের শাহ আলম খান (বর্তমানে কালবেলায় কর্মরত)। দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন চ্যানেল আই অনলাইনের আবু মো. ফায়জুল আরেফীন তানজীব ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদক আবু সালেহ সায়াদাত।
ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন চ্যানেল২৪-এর প্রতিবেদক মুকিমুল আহসান হিমেল। দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন একাত্তর টিভির নয়ন আদিত্য ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন মাছরাঙা টিভির নূর হোসেন বিশ্বাস।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক সমকালের রাজীব নূর (বর্তমানে বিডিনিউজে কর্মরত)।