বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিএনপির আন্দোলন দেখে ভীত হয়ে এই আদালতকে ব্যবহার করে এই পরোয়ানা জারি করেছে সরকার।’
দুর্নীতির দুটিসহ চারটি মামলায় দণ্ডিত তারেক রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরপর মঙ্গলবার নয়াপল্টনে মিছিল বের করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘সরকার এক অজানা ভয় থেকে তারেক রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পতনের ভয় থেকেই এসব করছে।’
তিনি বলেন, ‘আইন আদালতে ব্যবহার করছে বিরোধী দলের নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কিন্তু যতই নির্যাতন করুন না কেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আইন আদালতকে ব্যবহার করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।’
রিজভীর নেতৃত্বে মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল হয়ে আবার নয়াপল্টনে এসে শেষ হয়।
মিছিলে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না, কামরুজ্জামান দুলাল, গোলাম মাওলা শাহীন, এনামুল হক, ওমর ফারুক কাওছার, মেহেবুব মাসুম শান্ত, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউদ্দিন সেন্টুও অংশ নেন।
তারা অবিলম্বে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জারি করা পরোয়ানা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানায় তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তারেকের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে এই মামলা করে দুদক।
সেখানে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জোবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে।
বিদেশে অর্থ পাচার মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ১০ বছরের সাজা ও ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটূক্তির মামলায় তারেক রহমানের দুই বছরের সাজা হয়েছে।
২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তারের পরের বছর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে গিয়ে আর ফেরেননি বিএনপির এই নেতা। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার রাতে তারেককে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে বিএনপি।
তারেকের মতো জোবাইদাও যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তিনি সরকারি চিকিৎসক ছিলেন। দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে তাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।