বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিশ্বে দুর্ভিক্ষ আসছে, ফের সতর্কতা প্রধানমন্ত্রীর

  •    
  • ১ নভেম্বর, ২০২২ ১২:৫৩

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশটাকে দুর্ভিক্ষমুক্ত রাখতে হলে প্রতি ইঞ্চি জমিতে যেমন আবাদ করতে হবে, তা ছাড়া খাদ্যপণ্য উৎপাদন করা, প্রক্রিয়াজাত করা, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই ক্ষেত্রে আমি আমাদের যুবসমাজকে আহ্বান করব, তারা যেন আরও উদ্যোগ নেয়।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আগামী দিনে যে দুর্ভিক্ষের অবস্থা তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে, তা মোকাবিলায় দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো ও প্রক্রিয়াকরণে যুবসমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পৃথিবীর অনেক দেশ বয়োবৃদ্ধ দেশে পরিণত হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কর্মক্ষম জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে হবে অভীষ্ট লক্ষ্যে।

ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে জাতীয় যুব দিবসের উদ্বোধন এবং জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবনপ্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বর্তমান অবস্থার কথা বিবেচনা করে, অর্থাৎ কোভিড-১৯-এর যে অভিঘাত, সে করোনাভাইরাসের কারণে আজকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, তার ওপর ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধ। এই যুদ্ধের ফলে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে পর্যুদস্ত।

‘সেই ক্ষেত্রে আমাদের দেশে যেহেতু যুবসমাজ অত্যন্ত শক্তিশালী, তাদের আমি আহ্বান করব, আজকে বিভিন্ন সংস্থাও বলছে, সারা বিশ্বব্যাপী আগামী দিনে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। খাদ্যাভাব দেখা দেবে। অনেক উন্নত দেশ, সেখানেও কিন্তু এ ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজমান।

‘সেই অবস্থায় আমাদের বাংলাদেশটাকে দুর্ভিক্ষমুক্ত রাখতে হলে প্রতি ইঞ্চি জমিতে যেমন আবাদ করতে হবে, তা ছাড়া খাদ্যপণ্য উৎপাদন করা, প্রক্রিয়াজাত করা, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই ক্ষেত্রে আমি আমাদের যুবসমাজকে আহ্বান করব, তারা যেন আরও উদ্যোগ নেয়।’

নিজ নিজ এলাকায় উদ্যোগ নিতে যুবকদের প্রতি পরামর্শ রেখে সরকারপ্রধান বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত করা, সেটা আমরা যেমন আমাদের দেশের চাহিদা মেটাতে পারব, আবার অনেক দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশকে আমরা সহযোগিতাও করতে পারব। কেননা আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর। আর আমাদের সবচেয়ে বড় কথা যে আমাদের জনশক্তি, এই জনশক্তিটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে।’

দেশের যুবকদের গঠনে সরকার কারিগরি, বৃত্তিমূলক, কৃষিভিত্তিক ও বহুমাত্রিক শিক্ষাব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আত্মকর্মসংস্থানের চেষ্টাটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কারণ বিএ, এমএ পাস করে শুধু চাকরির পিছে ছুটলেই চলবে না। নিজেরা নিজেদের কাজ করতে হবে। নিজের মাস্টার নিজেকেই হতে হবে, নিজে কাজ দিতে হবে।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবা দেশের আনাচকানাচে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, যুবকদের তৈরি করতে রয়েছে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা মনে করি, একটা প্রশিক্ষিত যুব শ্রেণি গড়ে তোলা এটা একান্তভাবে অপরিহার্য। তবে আজকে আমাদের কতসংখ্যক প্রশিক্ষিত যুবক রয়েছে তার একটা ডেটাবেইস তৈরির পদক্ষেপ চলছে। সেটা হলে পরে আমরা জানতে পারব কর্মসংস্থান কাদের হয়েছে, আর কাদের হয়নি। যারা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে না তারাও যেন কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়, সেই ব্যবস্থাটা আমরা নিতে চাই।’

যুবসমাজকে দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের সব থেকে বড় শক্তিই হচ্ছে যুবসমাজ। আজকে পৃথিবীর অনেক দেশ বয়োবৃদ্ধ দেশ হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও বাংলাদেশ আমাদের কর্মক্ষম যুবশ্রেণি রয়ে গেছে, এটা একটি বিরাট শক্তি। এই শক্তিটাকে আমাদের যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে।’

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের নির্বাচনি ইশতেহারেও যুবকদের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলেও স্মরণ করিয়ে দেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘সেখানে আমাদের যেটা স্লোগান ছিল- তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। অর্থাৎ তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা আগামী দিনের সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলব। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা এই পদক্ষেপ নিই। সেখানে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের কথা বলা হয়েছে, যা সরকারের আসার পর আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’

৪০ হাজার দক্ষ চালক তৈরিতে প্রশিক্ষণের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার জন্য যুব মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের অত্যন্ত সুপ্রশিক্ষিত চালক প্রয়োজন। এখানে আমাদের বিরাট ঘাটতি রয়ে গেছে। মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি যত হচ্ছে, গাড়ি কেনারও প্রবণতা বাড়ছে।

‘তবে আমাদের দেশে গাড়ি অধিকাংশ নিজে চালায় না। ড্রাইভার দিয়ে চালায়, তাতে আমাদের যুবকদের কর্মসংস্থান হয়, এটা ঠিক। কিন্তু সেই সঙ্গে আমি মনে করি, যদি দক্ষতা অর্জন করা যায় তাহলে তাদেরও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

যুবকদের কর্মসংস্থানে সারা দেশে এক শটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির নতুন নতুন আবির্ভাব। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার। তার সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সে কাজটা আমাদের যুবসমাজই করবে। ছাত্র, তরুণ তারাই করবে। আমরা আমাদের যুবকদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, যেটা ভবিষ্যতে আসছে। তার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষিত, দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

এ বছর আত্মকর্মসংস্থানে দৃষ্টান্ত স্থাপনের স্বীকৃতি হিসেবে ১৫ যুবককে এবং স্বেচ্ছাসেবায় অনন্য অবদান রাখায় ৬ যুবসংগঠককে দেয়া হয়েছে জাতীয় যুব পুরস্কার। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সবার হাতে পুরস্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

এ বিভাগের আরো খবর