আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধনের জন্য ৯৮টি নতুন দল আবেদন করেছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন, যদিও আবেদনের সময় সীমা শেষ হওয়ার পর ৮০ দলের আবেদন করার কথা জানানো হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখন বলা হচ্ছে, দলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
৩০ অক্টোবর আবেদনের সময় শেষ হওয়ার পর কমিশনের জনসংযোগ শাখা থেকে ৮০ টি দলের আবেদন করার কথা জানানো হয়। তবে পরদিন সোমবার সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক আসাদুজ্জামান জানান, আবেদন করা দলের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৯৮।
সংখ্যা এই গরমিল কেন- জানতে চাইলে কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলগুলো কালকেই জমা দিয়েছে। আমাদের ওই শাখা হিসেবে ভুল করেছে। এর আগে ৪০ টি দল জমা দিয়েছে। শেষদিনে এত দল হওয়ায় হিসেবে ভুল হয়েছে।’
কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অনেকেই ডেসপাচে জমা দিয়েছিল। হাতে এসে পৌঁছেনি। সেগুলো করে ডেস্কে আসতে আসতে দেরি হয়েছে। দলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
বাংলাদেশে জিয়াউর রহমানের সেনাশাসনের সময় প্রথম রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর ২০০৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দ্বিতীয় দফা নিবন্ধন দেয়া হয়। নিবন্ধিত না হলে কোনো দল তাদের প্রতীক ব্যবহার করে ভোটে অংশ নিতে পারে না।
তখন ১১৭টি দল নিবন্ধনের আবেদন করে। যাচাইবাছাই শেষে নিবন্ধন দেয়া হয় ৩৯টি দলকে। পরে আরও পাঁচটি দল পায় নিবন্ধন। আবার পাঁচটি দল শর্ত ভঙ্গ করায় তাদের নিবন্ধন বাতিলও হয়। ফলে এখনও নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৩৯।
সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কে এম নূরুল হুদা কমিশনের কাছে ৭৬টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেও কোনো দলকে নিবন্ধন দেয়া হয়নি। আগ্রহী দলগুলো শর্তপূরণ করেছে বললেও যাচাই-বাছাইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। অবশ্য ভোটের পরে আদালতের আদেশে নিবন্ধন পেয়েছে দুটি দল। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।
সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন দেয়ার জন্য আবেদন আহ্বান করার বিধান আছে। সে মোতাবেক ২৬ মে দলগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান করে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এরপরই সময় বাড়ানোর জন্য জাফরুল্লাহ চৌধুরী দাবি জানালে আরও দুই মাস মেয়াদ বাড়ায় আউয়াল কমিশন।যে ১৮ দলের নাম রোববার জানানো হয়নি
যেসব দল নিবন্ধন চেয়েছে তার মধ্যে রোববার ৮০টি দলের নাম জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাদরে তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাওয়া অন্য দলগুলো হলো বাংলাদেশ গরীব পার্টি, বাংলাদেশ পিপলস পার্টি বিপিপি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্ট (বিজেএফ),
বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ শ্রমজীবী পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ সৎ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, জাতীয় ইসলামী মহাজোট, ফরওয়ার্ড পার্টি, ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী গ্রুপ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ (বিজেএল), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আইন সহায়তা ফাউন্ডেশন-আসফ ও স্বদেশ কল্যাণ কর্মসূচি।