বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইটভাটা বন্ধ করতেই হবে: মেয়র আতিক

  •    
  • ৩১ অক্টোবর, ২০২২ ১৬:৩১

সিপিডির সেমিনারে মেয়র আতিকুল ইসলামসহ আলোচকরা বলেন, ঢাকার আশপাশে অসংখ্য ইটভাটা গড়ে ওঠার কারণে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ছে। মাটির পোড়ানো ইটের পরিবর্তে কনক্রিট ব্লক ইট ব্যবহার করলে বায়ু দূষণ কমে যাবে।

পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর মাটির পোড়ানো ইটের ব্যবহার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘ইটের ভাটা বন্ধ করতেই হবে। এর জন্য যা যা কর দরকার, তাই করা হবে। পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার চালু করা হবে।’

সোমবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

পরিসংখানে বলে, ৬০ শতাংশ পরিবেশ দূষণ হয় ইটভাটার কারণে।

মেয়র বলেন, ‘ইটভাটা বন্ধের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসীমউদ্দীন বলেন, ‘ঢাকার আশপাশে অসংখ্য ইটভাটা গড়ে ওঠার কারণে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ছে। মাটির পোড়ানো ইটের পরিবর্তে কনক্রিট ব্লক ইট ব্যবহার করলে বায়ু দূষণ কমে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘ব্লক ইটের খরচ একটু বেশি। এর প্রধান কাঁচামাল পাথর। পাথর আমদানিতে প্রায় ৬৯ শতাংশ শুল্ক-কর দিতে হয়। ফলে উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে।’

তিনি জানান, সাশ্রয়ী দামে ব্লক ইট তৈরি করতে হলে এই পণ্যের জন্য কাস্টমস তালিকায় আলাদা এইচ এস কোড নির্ধারণ করে পাথরকে এর কাঁচামাল হিসেবে বিবেচনা করে কম হারে শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে। এটা করা হলে প্রতিটি ব্লক ইটের দাম ৭ থেকে ৮ টাকায় নেমে আসবে।

তিনি আরও জানান, সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার ১০ শতাংশে উন্নতি হওয়ার কথা। হয়েছে মাত্র ১ শতাংশ। বিশ্বের অন্যান্য দেশে অনেক আগে থেকে ইলেকট্রিক গাড়ি চলাচল করলেও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এটির অনুমতি দেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নীতি আছে, সমস্যা হচ্ছে বাস্তবায়নের। ২০০২ সালে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ ঘোষণা করা হলেও কার্যকর হয়নি এখনও। বরং দিন দিন পলিথিনের ব্যবহার বাড়ছে।’

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এই নেতা মনে করেন, ‘পরিবেশ দূষণের ক্ষেত্রে আমাদের সমস্যা প্রধানত দুটি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পয়ঃনিষ্কাশন। বর্তমান যুগ হচ্ছে সার্কুলার ইকনোমির যুগ। একজনের জন্য বর্জ্য, আরেক জনের জন্য কাঁচামাল। কাজেই, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে গুরুত্ব না দিলে পরিবেশের সুরক্ষা কঠিন হবে।’

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির রিসার্চ ফেলো ইউসুফ সাদাত। সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

পরিবেশ রক্ষায় সমন্বিত কাজের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ব্র্যাকের পরিচালক লিয়াকত আলী।

পরিবেশবিদ সাইফুল আলম পাইকার বলেন, ‘আমরা সুপারিশ করি। কিন্তু কার্যকর হয় না।’

দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ড. দিবাকর সিংহ বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের বাজেটে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ খুবই কম, যা বরাদ্দ দেয়া হয়, তা ঠিকমতো ব্যবহার হয় না। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এ খাতে মোট বাজেটের ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়াতে হবে।’

তিনি মনে করেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে ভালো না করতে পারলে পরিবেশের বিপর্যয় আরও বাড়বে।

অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, ‘ইদানীং আমার কাছে বিয়ের অনেক নিমন্ত্রণ কার্ড আসছে প্লাস্টিকের তৈরি। বিত্তবানরাই এটা বেশি করেন। হোয়াট ইজ দিস! বিয়ের কার্ড হতে হবে পাতলা, কম দামের। কেন এটা বেশি দাম দিয়ে প্লাস্টিকের করতে হবে?’

বিত্তবানদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের টাকা আছে। আলহামদুলিল্লাহ। এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। আমি অনুরোধ করব, আল্লাহর ওয়াস্তে বিয়ের কার্ড প্লাস্টিকে করবেন না। আমাদের শহরকে বাঁচাতে হবে।’

মেয়র জানান, বাড়িঘর ভবন নির্মাণে দেখা যায় অনেকেই রড সিমেন্ট বালু রাস্তায় ফেলে রাখেন। এতে ধুলা জমে বায়ু দূষণ বাড়াচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে। রাস্তা জনগণের। রড ফেলে রাখার জন্য নয়।’

একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘মিরপুরে পিডব্লিউডি রাস্তায় রড সিমেন্ট রেখে ভবন বানাচ্ছে। আমি প্রকল্প পরিচালককে ধরলাম। তিনি কোনো জবাব দিতে পারেননি। আপস করিনি। ৩ কোটি টাকার রড ১৮ লাখ টাকায় নিলামে বিক্রি করেছি।

‘আমি এই বার্তা দিতে চাই, আপনি যেই হন না কেন, আই ডোন্ট কেয়ার। আইন অমান্য করলে শাস্তি পেতেই হবে।’

তিনি মনে করেন, শহরে নর্দমা ভরাট হয়, বড় বড় বিল্ডিং পাইলিংয়ের কারণে। নর্দমা ভরাটের কারণে নিচ থেকে ওঠা কাদামাটি সরে যেতে পারে না। মাটি সিমেন্টের মতো শক্ত হয়ে যায়। এটা ঢাকা শহরের এটি একটি বড় সমস্যা। এ জন্য একটি পলিসি করা দরকার।’

মেয়ার বলেন, ‘সময় এসেছে ঢাকাকে বায়ু দূষণ এবং যানজটের কবল থেকে বাঁচানোর। এ জন্য ইটভাটা বন্ধ, যানজট নিরসন ও ধুলা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এসব বিষয়ে আমরা কাজ করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর