বরগুনার আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই আমতলী পৌর ভবনের সামনে রোববার দুপুরে ঘটেছে এই ঘটনা।
সম্মেলনে থাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জিএম ওসমানী হাসান বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খান আমাদের উদ্দেশ্য করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
‘তার এমন বক্তব্যে আমতলী পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর জিএম মুসা, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জিএম হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি নাজমুল আহসান নান্নু ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান মিয়াসহ আমরা কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে সভামঞ্চে গিয়ে প্রতিবাদ করি।
‘আমরা মঞ্চ থেকে নামতেই পরিকল্পিতভাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মতিয়ার রহমান তার সন্ত্রাসী বাহিনী লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। তারা চেয়ার ভাঙচুর করে। নেতাকর্মীরা ছুটাছুটি করে চলে যায়।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. জাফর হোসেন বলেন, ‘সভামঞ্চের বাইরেও দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়ায়। ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারধরের ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় নেতারা তাদের থামাতে না পেরে সভামঞ্চ ছেড়ে নিরাপদে চলে যান। পরে পুলিশ এসে তাদের নিয়ন্ত্রণ করে।’
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম মুসা বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল অঞ্চল) আফজাল হোসেন ও শাম্মী আহম্মেদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বারবার দুই পক্ষকে থামাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
‘কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই উপজেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সবুজ ম্যালাকার, শাহাবুদ্দিন শিহাব ও ইসফাক আহম্মেদ, সুজন প্যাদা, রুহুল আমিন ও ত্বোহাসহ মেয়র মতিয়ারের সন্ত্রাসী বাহিনীর ২০ থেকে ২৫ নেতাকর্মী আমাকে ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জিএম হাসানকে পিটিয়ে আহত করে।’
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান বাদল খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘’জিএম মুসা ও তার ভাই হাসান, নাজমুল হাসান নান্নু, ফোরকান মিয়া, শাহজাহান কবির ও গাজী সামসুল হক গণ্ডগোল করতেই সভামঞ্চে এসেছে। তারা সম্মেলন বানচাল করতেই সংঘর্ষে জড়িয়েছে। তাদের হামলায় আমার অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।’
সংঘর্ষে আহত নেতাকর্মীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান।
এ ঘটনার ঘণ্টাখানেক পর কেন্দ্রীয় নেতারা ফের সভাস্থলে আসলে শুরু হয় সম্মেলন।
দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ ঘটনার সঙ্গেে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তবে সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি বলে জানিয়েছেন ওসি।