ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, অন্যের অর্থে নয় বরং তিনি রাজনীতি করেন পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বিএনপির অঙ্গ দলগুলোর সঙ্গে যোথ সভা করেন বিএনপির মহাসচিব।
আওয়মী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেন, আমি নাকি দুবাইয়ের টাকা পাই, টাকার ওপর ঘুমাই।
‘বেশি ঘাঁটাবেন না, বেশি ঘাঁটালে কেঁচো বেরিয়ে যাবে। আমরা পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি। আমাদের নেতা-কর্মীরা নিজের টাকায় চাঁদা দিয়ে সমাবেশ করছে। আর আপনারা (আওয়ামী লীগ) কী করেন এটা সবাই জানে।’
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘দি ইজ ভেরি আনফরচুনেট। ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না। সামাল দিতে পারবে না। কার কয়টা বাড়ি, কার কত টাকা আছে, এত টাকা কোথা থেকে আসে...। আমি ব্যক্তিগত আক্রমণে যেতে চাই না। এটা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না।’
গত ১৫ বছরে অর্থনীতিকে ভাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশ দুর্ভিক্ষে পরিণত হয়েছে, এটা আমার কথা নয় প্রধানমন্ত্রীর কথা।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতির অধিকারের কোনো জায়গা নাই, সব নষ্ট করে দিয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। জাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচনকালীন ৯০ দিনের তত্ত্ববধায়ক সরকার থাকবে। এটাকে বাতিল করেছে আওয়ামী লীগ৷ এখন বলে তারা করেনি, আদালত করেছে। টিকে থাকার জন্য জনগণকে বোকা বানানে চায়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এত উন্নয়ন করেছেন তাহলে ভয় পান কেন? কারণ যে দুর্নীতি করেছেন তাতে ভোটে কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’
৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দিনটি জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ ও দেশপ্রেমিক সৈনিকদের অভ্যুত্থানে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের শুভসূচনা হয়েছিল। ভ্রান্ত সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির অন্ধকার গহ্বর থেকে টেনে তুলেছিলেন জিয়াউর রহমান। ৭ নভেম্বরের মধ্য দিয়ে জাতি নতুন করে আশা দেখতে শুরু করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী দুঃশাসনের কারণে শতকরা ৩০ ভাগ লোক খাদ্যসংকটে।নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছে। নিজেদের তৈরি করা আদালতের মধ্য দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন বাতিল করে জাতির সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে তারা।
‘জাতিকে সব সময় বোকা বানানোর চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ। জনগণের প্রতি আস্থা থাকলে এত ভয় কেন। বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশে কেন বাধা দেন? ’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি নেতা মীর শরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, সুলতানা রহমান, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।