বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভ্রমণ শেষে ফেরার পথে নিহত বাবা-মেয়ে

  •    
  • ৩০ অক্টোবর, ২০২২ ১২:০২

চালক কামরুল হাসান বলেন, ‘কক্সবাজার থেকে ঢাকা পর্যন্ত আসার পর রাত ১টার দিকে ভাই নিজেই গাড়ি চালিয়ে শরীয়তপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের পর সড়ক সরু ও ভাঙা থাকায় আমি গাড়ি চালাতে চাইলেও ভাই দেননি। জামতলা মোড়ে এলে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খাদে পড়ে যাই আমরা। আমি অনেক কষ্টে গাড়ির কাচ ভেঙে বাইরে এসে ভাবি ও তার বড় মেয়েকে জীবিত উদ্ধার করি। পানির নিচে দীর্ঘ সময় আটকা থাকায় ভাই ও ছোট মেয়েকে জীবিত উদ্ধার করতে পারিনি। গভীর রাত হওয়ায় চিৎকার করেও তাৎক্ষণিক কারও সহায়তা পাইনি।’

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পরিবার নিয়ে আনন্দ ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে প্রাইভেট কার খাদে পড়ে এক আইনজীবী ও তার শিশুকন্যা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন গাড়িতে থাকা নিহতের স্ত্রী, বড় মেয়ে ও মাইক্রোচালক।

উপজেলার জামতলা এলাকায় শরীয়তপুর-ঢাকা মহাসড়কে শনিবার রাত ৩টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাসানচর গ্রামের রাশেদুল হক রাশেদ ও তার ছোট মেয়ে ২ বছরের মাইশা। শরীয়তপুর জজ কোর্টের আইনজীবী ছিলেন রাশেদ।

এ ছাড়া দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন রাশেদের স্ত্রী মিলি আকতার, বড় মেয়ে মেবিন আকতার ও চালক কামরুল হাসান।

ওসি জানান, গত বুধবার পরিবার নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে যান রাশেদ। ভ্রমণ শেষে মাইক্রোবাসে করে শনিবার ঢাকা হয়ে শরীয়তপুর ফিরছিলেন তারা। কক্সবাজার থেকে ঢাকা পর্যন্ত চালক কামরুল হাসান গাড়ি চালান। তাকে বিশ্রাম দিতে ঢাকা থেকে রাশেদুল নিজেই গাড়ি চালিয়ে শরীয়তপুরের উদ্দেশে রওনা দেন।

রাত ৩টার দিকে ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কের জামতলা‌ এলাকায় এলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোটি সড়কের পাশে ডোবায় পড়ে যায়। এ সময় গাড়ির জানালার কাচ ভেঙে বেরিয়ে রাশেদুলের স্ত্রী ও বড় মেয়েকে উদ্ধার করেন কামরুল। তবে বাঁচাতে পারেননি রাশেদুল ও তার মেয়ে মাইশাকে।

চালক কামরুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কক্সবাজার থেকে ঢাকা পর্যন্ত আসার পর রাত ১টার দিকে ভাই (রাশেদ) নিজেই গাড়ি চালিয়ে শরীয়তপুরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের পর সড়ক সরু ও ভাঙা থাকায় আমি গাড়ি চালাতে চাইলেও ভাই দেননি। জামতলা মোড়ে এলে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খাদে পড়ে যাই আমরা।

‘আমি অনেক কষ্টে গাড়ির কাচ ভেঙে বাইরে এসে ভাবি ও তার বড় মেয়ে মেবীনকে জীবিত উদ্ধার করি। পানির নিচে দীর্ঘ সময় আটকা থাকায় ভাই ও ছোট মেয়েকে জীবিত উদ্ধার করতে পারিনি। গভীর রাত হওয়ায় চিৎকার করেও তাৎক্ষণিক কারও সহায়তা পাইনি।’

নিহত রাশেদুলের স্ত্রী মিলি আকতার বলেন, ‘লম্বা সফরে ক্লান্ত থাকায় গাড়িতে ঘুমের ঘোরে ছিলাম সবাই। ড্রাইভারকে না দিয়ে সে (রাশেদ) নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিল। আমার দুই পাশে দুই মেয়ে ঘুমিয়ে ছিল। হটাৎ বিকট শব্দে গাড়িটি আছড়ে পরে ডোবায়। স্বামী ও ছোট সন্তানকে বাঁচাতে পারলাম না।’

নড়িয়া থানার ওসি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু এটি সড়ক দুর্ঘটনা এবং পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর