বগুড়ার সোনাতলায় আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে ও নাতির বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বামীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
উপজেলা পরিষদের চত্বরে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনের সামনে শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শামিম হোসেন ও তার ছেলে আলিফ সোনাতলা পৌর এলাকার বাসিন্দা। পেশায় ব্যবসায়ী শামিম উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সোনাতলা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুব আলম বুলুর ছেলে।
মারধরের শিকার ব্যক্তির নাম আল-আমিন শিকদার। তিনি সফটওয়্যার ডেভেলপার এবং সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইদা পারভীনের স্বামী।
এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন সোনাতলা থানার ওসি সৈকত হাসান।
তিনি জানান, সোনাতলা উপজেলা পরিষদের কোয়ার্টার এলাকায় ব্যাডমিন্টন খেলার কোর্ট আছে। সেখানে অনেকেই ব্যাডমিন্টন খেলেন। সন্ধ্যার দিকে ইউএনও সাইদা পারভীনের স্বামী সেখানে খেলার জন্য যান।
এ সময় সেখানে আগে থেকে শামিম হোসেন ও তার ছেলে আলিফ ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। এ অবস্থায় ইউএনওর গাড়িচালক খেলার কোর্টে গিয়ে তাদের চলে যেতে বলেন। কিন্তু এতে শামিম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ওই চালকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
এ সময় ইউএনওর স্বামী তাদের ঝগড়া করতে নিষেধ করলে তার বুকে লাথি মারেন শামিম। পরে তার ছেলে আলিফও হামলা চালান আল-আমিনের ওপর।
ওসি বলেন, ‘ঘটনার পরপরই শামিম ও তার ছেলে আলিফকে আটক করেছে পুলিশ। তারা এখন থানা হাজতে। এ বিষয়ে ইউএনও সাইদা পারভীন আইনি ব্যবস্থার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
এদিকে, মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শামিমের বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহবুব আলম বুলু। দাবি করেছেন, ইউএনওর স্বামীকে তার ছেলে ও নাতি কোনো মারধর করেননি, একটু ধাক্কা-ধাক্কি হয়েছে।’
মাহবুব আলম বলেন, ইউএনওর স্বামী তো অপরিচিত মানুষ। কিন্তু আমার ছেলে-নাতিকে সবাই চেনে। সন্ধ্যার আগে ইউএনওর বাসভবনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আমার ছেলের সঙ্গে তার ধাক্কা লাগে। এতে ইউএনওর স্বামী উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ সময়ই ধাক্কা-ধাক্কি হয়েছে। এর জেরে আমার ছেলে-নাতিকে থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ।’
তবে সন্ধ্যার দিকে খেলার মাঠে কোনো কারণ ছাড়াই স্বামী আল-আমিনের ওপর শামিম ও তার ছেলে আলিফ হামলা করে বলে অভিযোগ করেন সোনাতলা ইউএনও সাইদা পারভীন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ভারত থেকে আমার স্বামীর হার্টে অপারেশন করা হয়েছে। বুকের হাড়ে স্ক্রু বসানো আছে। আমার স্বামীর বুকের স্ক্রু ডিসপ্লেস হয়েছে। শামিম ও তার ছেলের হামলায় বুকের স্ক্রু সরে গেছে।’
ইউএনও বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।