ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার দাবিতে নওগাঁয় সমাবেশ করেছেন চালকল শ্রমিকরা।
শনিবার বিকেল ৫টার দিকে জেলা শহরের দক্ষিণ সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ হয়। জেলা ধান্য বয়লার ও অটো সাটার শ্রমিক ইউনিয়ন এ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার।
তিনি বলেন, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারিত না থাকায় চালকল মালিকরা ইচ্ছামতো মজুরি দিচ্ছেন। কোথাও একজন শ্রমিক দিনে ১৫০ টাকা, কোথাও ২০০ টাকা, কোথাও ২৫০ টাকা মজুরি পেয়ে থাকেন। এর সঙ্গে তিন বেলার খাবার হিসেবে কোথাও এক কেজি, আবার কোথাও দুই কেজি করে চালের খুদ (ভাঙা চাল) দেয়া হয়।
জলি তালুকদার বলেন, বর্তমান বাজারে এই মজুরি দিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন শ্রমিকেরা। সরকারের মধ্যস্থতায় মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের মধ্যে আলোচনারভিত্তিতে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ এখন সময়ের দাবি। শ্রম আইন অনুযায়ী এবং শ্রমিক ও চালকল মালিকপক্ষের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী প্রতি তিন বছর পর পর চালকল শ্রমিকদের মজুরি সমন্বয় হওয়ার কথা। সর্বশেষ ২০১৫ সালে দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়। সেই চুক্তির মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হলেও এখন পর্যন্ত চালকল শ্রমিকদের মজুরি সমন্বয় হয়নি।
ট্রেড ইউনিয়ন নেতা জলি আরও বলেন, আট বছর আগের চুক্তি অনুযায়ী একজন চাতালশ্রমিক প্রতি বস্তা ধান শুকানোর জন্য এক টাকা, ট্রাকে ধান-চাল লোড-আনলোডের জন্য তিন টাকা করে পাওয়ার কথা। এই চুক্তিতে কাজ করে একজন শ্রমিক সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে উপার্জন করেন। অনেক মালিক সেই চুক্তিও মানেন না।
নওগাঁ জেলা ধান্য বয়লার ও অটো সাটার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোজাফফর হোসেন সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা ধান্য বয়লার ও অটো সাটার শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা ও সিপিবির জেলা সভাপতি মোহসীন রেজা ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন নওগাঁ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আইজুল হক, সহসাধারণ সম্পাদক আনসার আলী, সিপিবি নেতা কমরেড আলিমুর রেজা রানা, কমরেড মোমিনুল ইসলাম স্বপন।
সিপিবি নেতা মোহসীন রেজা বলেন, জেলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ চালকল আছে। এসব চালকলে ৩০ হাজারের ওপর শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ৭০ শতাংশের ওপরে। বর্তমানে চালকল শ্রমিকেরা যে বেতন পান, তা অমানবিক ও অবাস্তব।