আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল হওয়ায় বিএনপিসহ বিরোধীমতের রাজনৈতিক দলগুলো সভা-সমাবেশ করতে পারছে। এমনটি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
শনিবার দুপুরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘এটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। একটা দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ একটি রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি দল। তাই আমরা আপনাদের (বিএনপি) সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছি। এর মানে এটা মনে করবেন না, আওয়ামী লীগকে নাড়া দিলেই পড়ে যাবে। এমন স্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন। আওয়ামী লীগ কচুপাতার পানি নয়।’
সেই সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শিক্ষক হয়েও নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছেন, অভিযোগ করেন হানিফ।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একজন শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষক কীভাবে এমনভাবে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেন, এমন প্রশ্ন তুলেছেন মাহবুব উল আলম হানিফ। সেই সঙ্গে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
হানিফ বলেন, ‘দেশ নাকি শেষ হয়ে যাচ্ছে, রিজার্ভ নাকি শেষ হয়ে গেছে। এগুলো বলেন বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আমি বলি মির্জা ফখরুল একজন শিক্ষক ছিলেন। একজন শিক্ষক কীভাবে এত নির্লজ্জ হতে পারেন? আমি মির্জা ফখরুলকে বলব এখন দেশে বিদ্যুৎ আছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আছে। আপনারা কী রেখেছিলেন।’
‘একসময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না। তখন দেশের মানুষ কত কষ্টে ছিল চিন্তা করা যায় না। এখন ক্ষমতায় আসার লোভে ল্যাম্প পোস্টের আলোর নিচে হারিকেন নিয়ে দাঁড়িয়ে তারা বিদ্যুতের দাবি জানায়। কী হাস্যকর।’
মাহবুব উল আলম হানিফ আরও বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বেই সংকট চলছে। অথচ মির্জা ফখরুলরা সেই ভাঙা রেকর্ডার বাজিয়ে যাচ্ছেন। করোনা দুর্যোগ যেভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে তাতে পুরো পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মাননীয় প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরও বন্ধ হয়নি ভাঙা রেকর্ডার বাজানো।’
হানিফ বলেন, ‘এখন বিএনপির নেতারা বলছেন টেক ব্যাক বাংলাদেশ। এর মানে কী বাংলাদেশকে আবার পেছনে ফিরিয়ে নেয়া। ২০০৬-এর দিকে নেয়া। পাকিস্তানি আমলে ফিরিয়ে নেয়া। হ্যাঁ, তারা এটাই লালন করেন। এ জন্যই তারা বলে টেক ব্যাক বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে যদি এতই ভালো লাগে আমি বলব গো ব্যাক পাকিস্তান। চলে যান পেয়ারে পাকিস্তানে। আপনাদের সেখানেই মানায়।’
হানিফ বলেন, ‘বিএনপির আমলে শাহ এম এস কিবরিয়া, আইভি রহমানসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে মেরে ফেলা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ২৩ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেদিন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত আইভি রহমানসহ নেতা-কর্মীদের হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়েছে। ড্যাবের চিকিৎসকেরা আসেননি চিকিৎসা দিতে। তখনই বুঝেছিলাম কী ষড়যন্ত্র সেদিন করা হয়েছিল। এখন আপনাদের মুখে মানবতার কথা মানায় না। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের। চোখের পানি ফেলতে হবে।’
সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব।
সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুরসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা ।
এর আগে সকাল ১০টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপরই পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।