যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত পিতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ‘শহীদ’ সম্বোধন এবং হুম্মামের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় তাদের পারিবারিক বাসভবন ‘গুডস হিল’ ঘেরাও করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।
পাশাপাশি এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীর স্ত্রী-সন্তানদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও সম্পদ বাজেয়াপ্তের দাবি, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী, নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড, জঙ্গি মদদ ও নাশকতার প্রতিবাদ জানানো হয়।
শনিবার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নগরীর গণি বেকারি এলাকায় গুডস হিলের সামনে এই কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটির মহানগর ও জেলা ইউনিট।
এ সময় যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাসভবন গুডস হিলের বাইরে ‘রাজাকার হিল’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধাদের উপর নির্যাতন কেন্দ্র’ হিসেবে নামফলক সাঁটিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত পিতাকে ‘শহীদ’ সম্বোধনের ঘটনায় ক্ষমা চাইতে সাকাপুত্র হুম্মামকে গত ১৮ অক্টোবর প্রেস ক্লাব চত্ত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ৭ দিন সময় বেঁধে দিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।
২২ অক্টোবর বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে শনিবার সে কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় মহা সমাবেশে যুদ্ধাপারাধী সাকা চৌধুরীকে ‘শহীদ’ সম্বোধন করে ‘নারায়ে তাকবীর’ স্লোগান দেন হুম্মাম কাদের চৌধুরী। এই স্লোগানকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশ ও গুডস হিল ঘেরাও কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী গাজী নুরুল আবছার বলেন, ‘আমি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একজন সাক্ষী। আমি কোনো রাজনৈতিক দল বা মতের পক্ষে নয়, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভূমিকা রেখেছি। আজকে অনেক দুঃখ লাগছে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর রাজাকারের বিরুদ্ধে আবার আমাদের সোচ্চার হতে হবে। আমি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারকে সাবধান করে দিতে চাই, তারা যেন তাদের (রাজাকার) সাথে ভাই-ভাই না খেলে। আন্তর্জাতিক চাপে যেন নুইয়ে না যায়।’
জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও যারা এই দেশকে নিজের দেশ মনে করতে পারেনি, আমরা বলব তারা এই দেশ থেকে চলে যাক। যারা পাকিস্তানের দোসর হয়ে ১৯৭১ সালে আমাদের এই বাংলাদেশ স্বাধীন হোক চায়নি, তারা আজকেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তাদের সন্তানরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে। বক্তব্য রাখছে। তার বক্তব্য তুলে নিতে হবে, তারা যদি এই দেশে বসবাস করতে চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে বসবাস করতে হবে। এই দাবিতেই আজকের এই কর্মসূচি।’
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
অতিসত্বর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের দাবি মেনে নেয়া না হলে আরও বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় কর্মসূচি বাস্তবায়নে জামাল খান এলাকার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে একটি মশাল মিছিলও করেছে সংগঠনটি।