বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় মানিকগঞ্জ সদরে ভাড়া বাসায় চলছে পশ্চিম দাশড়া সরকারি বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। ছোট ছোট কক্ষের ভেতরে গাদাগাদি করে বসতে হয় শিশুদের।
শহরের ভেতরেই শিক্ষার এমন পরিবেশে হতাশ শিক্ষক ও অভিভাবকরা। ভবন কবে হবে সে বিষয়ে কিছুই জানে না কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম দাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭৫ সালের প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের এক তলা ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে অনেক আগেই। কিন্তু ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সম্প্রতি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর। গত বছর দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও ভবনের কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩৫ জনে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাজিয়া আক্তার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পর স্থানীয় একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তারাও বিপদে আছেন। রোদ-বৃষ্টির সময় শিক্ষার্থীদের প্রচণ্ড কষ্ট করতে হয়। তাছাড়া বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগপত্রও নষ্ট হচ্ছে।’
আরেক শিক্ষক সামসুন্নাহার বলেন, ‘প্রাইমারি না হলে তেমন কষ্ট হতো না। কারণ ওরা তো শিশু, ওদের কষ্টটা বেশি। ভাড়া বাসায় স্কুলের পড়ালেখার তেমন পরিবেশ নাই।
শিশুদের পড়ালেখার বিষয়টি মাথায় নিয়ে সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলেও জানান তিনি।
বিদ্যালয়ে শিক্ষক জ্যোসনা আক্তার বলেন, ‘গ্রাম বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন নতুন ভবন হচ্ছে। অথচ আমাদের বিদ্যালয়টি পৌরসভার ভেতরে হওয়া সত্ত্বেও তেমন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। শিক্ষার পরিবেশবান্ধব বিদ্যালয় না হওয়ায় শিক্ষার্থী ধরে রাখতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে।’
ইতোমধ্যে ১৫ জন শিক্ষার্থী অন্য বিদ্যালয়ে চলে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থী সংকটে পড়বে বিদ্যালয়টি।
তাসলিমা আক্তার নামের আরেক শিক্ষক বলেন, ‘শিশুদের সঠিকভাবে বড় করতে ও প্রাথমিকে পাঠদান করতে প্রয়োজন হয় ভালো ও খোলামেলা পরিবেশ। তাছাড়া আরও কিছু সুবিধা থাকতে হয়, সেগুলোও নেই।’
বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের সাথে সাথে অভিভাবকরাও হতাশ।
সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মোহসীন রেজা বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পর নতুন ভবনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। নতুন ভবনের বিষয়টি এলজিইডি ভালো বলতে পারবে, ভবনের অনুমোদন আসছে কি না।’
ইডুকেশনাল ইমারজেন্সি ত্রাণ ফাউন্ড থেকে তিন লাখ টাকা পাওয়ার পর টিনশেডের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে এবং বাকি টাকা থেকে ভাড়া দেয়া হচ্ছে। তবে ভাড়ার বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ভালো বলতে পারবে বলেও জানান ওই শিক্ষা কর্মকর্তা।