বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জেসমিনের নার্সারিতে ৩০০ প্রজাতির গাছ, করেছেন কর্মসংস্থানও

  •    
  • ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ০৮:৩৯

জেসমিন বলেন, ‘শুধু গৃহিণী হিসেবে নয়, নিজেকে দেখতে চেয়েছিলাম একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। স্বামীর পরামর্শে সারাদিন স্বপ্নের নার্সারিতে সময় দিয়েছি। ধীরে ধীরে সফলতা পেয়েছি। বর্তমানে ৩০০ প্রজাতির উন্নত মানের ৪ লক্ষাধিক চারা রয়েছে। এগুলো বিক্রি করা হচ্ছে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।’

নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে গৃহিণীর পরিচয়ের পাশাপাশি সফল উদ্যোক্তার পরিচয় গড়ে তুলেছেন জেসমিন আরা। নার্সারির মাধ্যমে নিজে আর্থিকভাবে সফলতার পাশাপাশি অনেকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি করেছেন তিনি।

ময়মনসিংহের পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ঘেঁষা গৌরীপুর উপজেলার কাশিয়ারচর এলাকায় গড়ে তোলা এই নার্সারির নাম ‘আধুনিক নার্সারি অ্যান্ড হর্টিকালচার ফার্ম।’

নার্সারিতে গিয়ে দেখা গেছে, বনজ চারা ছাড়াও দেশি-বিদেশি জাতের আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, কমলা, আমড়া, লেবু, জাম্বুরা, লটকনসহ বিভিন্ন জাতের অসংখ্য চারা রয়েছে সেখানে। শ্রমিকরা এসব চারা পরিচর্যাসহ নানা কাজ করছেন। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছেন জেসমিন৷

এ সময় কথা হয় কয়েকজন নারী শ্রমিকের সঙ্গে। নাসিমা নামে এক শ্রমিক নিউজবাংলাকে জানান, কেউ অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। আবার কেউ ছিলেন গৃহিণী। এ নার্সারিতে কাজ পাওয়ায় বেতনের টাকা দিয়ে স্বামীর পাশাপাশি তারাও সন্তানদের লালনপালনে ভূমিকা রাখছেন। কাজ পেয়ে অনেকে হয়েছেন স্বচ্ছল।

জেসমিন জানান, আপাদমস্তক গৃহিণী ছিলেন তিনি। তবে কিছু একটা করার প্রবল ইচ্ছে ছিল মনে।

জেসমিনের স্বামী শামছুল আলম মিঠু ময়মনসিংহে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিনা) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। কাজ করার ইচ্ছার কথা জানালে শামছুল আলম নার্সারি গড়ে তোলার পরামর্শ দেন৷ ২০১৯ সালে জেসমিন শুরু করেন নার্সারির কাজ। সফলতা পাওয়ায় বর্তমানে ১২ একর জায়গাজুড়ে তিনি নার্সারি গড়ে তুলেছেন। এজন্য তিনি সরকারিভাবে পেয়েছেন স্বীকৃতি, হয়েছেন সম্মানিত।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অধীনে বৃক্ষরোপণে বিশেষ অবদান রাখায় প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়। ১৯৯৩ সাল থেকে চালু হওয়া এই পুরস্কারের প্রতিটি শ্রেণির পুরস্কারপ্রাপ্তদের সনদপত্রসহ প্রথম স্থান অধিকারীকে ৩০ হাজার, দ্বিতীয় স্থান অধিকারীকে ২০ হাজার ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে ১৫ হাজার টাকার চেক দেয়া হয়। এবার জেসমিন আরা প্রথম হয়েছেন।

জেসমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুধু গৃহিণী হিসেবে নয়, নিজেকে দেখতে চেয়েছিলাম একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। স্বামীর পরামর্শে সারাদিন স্বপ্নের নার্সারিতে সময় দিয়েছি। ধীরে ধীরে সফলতা পেয়েছি। বর্তমানে ৩০০ প্রজাতির উন্নত মানের ৪ লক্ষাধিক চারা রয়েছে। এগুলো বিক্রি করা হচ্ছে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। নিয়মিত ২১ জনসহ ৩৫ জন শ্রমিক এ নার্সারিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বছরে ৩৫ লাখ টাকার চারা বিক্রি করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘নারীরা ইচ্ছে করলেই আত্মনির্ভরশীল হতে পারে। সেজন্য প্রয়োজন নিজের ইচ্ছেশক্তি ও পরিশ্রম। পাশাপাশি সফল উদ্যোক্তার পরামর্শ কিংবা প্রশিক্ষণ নিলে তা আরও সহজ হয়। সেক্ষেত্রে আমি সফল হয়েছি। আমার কাছে অনেকে আসে নার্সারি করার জন্য। আমি তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নার্সারি গড়ে তুলেছেন।

জেসমিনের স্বামী শামছুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। পরিবেশে রক্ষায় বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। কারণ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে গাছের অবদান অপরিসীম।’

তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী নার্সারিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় দেন৷ তার কঠোর মনোবল ও পরিশ্রমের কারণে সফলতা এসেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর