সমাবেশে যোগ দিতে রংপুর যাওয়ার পথে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হুমকিধামকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সরকার দলীয় লোকজনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার বিকেলে গণসমাবেশ নিয়ে রংপুর কালেক্টরেট মাঠে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে জাতীয় নেতারা রংপুরের মাটিতে আসাতে শুরু করেছেন। আশপাশের জেলা থেকে নেতা-কর্মীরা অমানবিক কষ্ট করে আসছেন, সেখানে পথে পথে সরকার দলীয় লোকেরা হুমকিধামকি দিচ্ছেন। এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
শনিবার বিএনপির রংপুর বিভাগের বিভাগীয় মহাসমাবেশ। এর আগে খুলনায় সমাবেশের আগের দিন ও সমাবেশের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছিল পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। মহাসড়কে থ্রি হুইলার বন্ধের দাবিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা গণ পরিবহন বন্ধ রাখার কথা জানালেও সরকারের চাপে তা বন্ধ রাখা হয় বলে বিএনপি আগে থেকেই বলে এসেছে।
খুলনার মহাসমাবেশে যোগ দিতে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা এক থেকে দুই দিন আগেই খুলনায় নানা উপায়ে প্রবেশ করতে থাকেন। সমাবেশের আগের রাতে অসংখ্য নেতা-কর্মী খুলনা শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। সমাবেশস্থলেও রাতে অসংখ্য নেতা-কর্মী রাতযাপন করেন।
এমনকি সমাবেশে যাওয়ার পথে বিভিন্ন পয়েন্টে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারদলীয় লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ করে বিএনপি।
রংপুরের সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া নেতা-কর্মীদের ওপরও একইভাবে হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন এমপি হারুন। তিনি বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এ দেশ কারও বাপ-দাদার নয়, দেশ ও জনগণের। জনগণের কষ্ট দুঃখ লাঘবের জন্যে আজ আমরা রাস্তায় নেমেছি। কোনো বাধা বিঘ্ন আমাদের সরাতে পারবে না। এই সরকারকে আমরা বিদায় করব, এই সরকার বিদায় হবে, বিদায়ের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।’
হারুন বলেন, ‘এই সরকার নির্লজ্জ এবং বেহায়া। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে উনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, আমরা আগামীতে সমাবেশ কাকে বলে দেখিয়ে দেব। এটা আওয়ামী লীগের মুখে শোভা পায় না। আমরা সমাবেশ করছি, আজ সারা দেশের মানুষ দুর্বিসহ যন্ত্রনায় আছে, মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। মানুষ ভোট দিতে পারে না, দ্রব্যমূলের ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতি, শিল্প কারখানা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না, মানুষ আজ দুর্ভোগের শিকার।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্যে আজ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বিএনপির নেতৃত্বে দেশব্যাপী যে সমাবেশ হচ্ছে, সেগুলোকে বাধাগ্রস্ত করতে সরকার একের পর এক যে নাটক মঞ্চস্থ করছে, এর জবাব দেশের জনগণ দেবে।
‘আজ গোটা বিভাগের মানুষকে সরকার অবরুদ্ধ করেছে। চিকিৎসা, শিক্ষা বন্ধ। দূরপাল্লার গাড়িও বন্ধ করে দিয়েছে। কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার জানাজায় আসা যাচ্ছে না।’
রংপুরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল থেকেই বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা নানা পন্থায় রংপুর যেতে শুরু করেছেন। অনেকেই ট্রেনে করে যাচ্ছেন, কেউ আবার ব্যক্তিগত গাড়িতেও যাচ্ছেন।
সন্ধ্যায় দেখা গেছে বিভিন্ন জেলা থেকে ছোট ছোট দলে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থল কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে এসে উপস্থিত হতে শুরু করেছেন। মাঠে এখনই অসংখ্য নেতা-কর্মী জমায়েত হয়েছেন।
বিকেলের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব দুলু, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামুসহ অন্যরা।