রংপুরের সমাবেশে নীলফামারী থেকে অন্তত দশ হাজার মানুষ অংশ নেবে। এর মধ্যে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থক এবং সাধারণ মানুষও আছেন।
নীলফামারী জেলা বিএনপি নেতারা শনিবার রংপুরের সমাবেশে উপস্থিতি নিয়ে আগাম এমন দাবি করছেন।তারা জানান, শুক্রবার সকাল থেকে নীলফামারী থেকে রংপুরে যাওয়া শুরু হয়েছে। নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যাচ্ছেন মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশা, মাইক্রোবাসে। রেলপথ ব্যবহার করছেন ডোমার ও চিলাহাটির নেতা-কর্মীরা। তারাও ট্রেনে সকাল থেকেই রংপুরে যাওয়া শুরু করেন।
শুক্রবার ৫০০ মোটরসাইকেল রংপুর গেছে বলে জানান তারা।
জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক জামিয়ার রহমান বলেন, ‘আমরা বিকেলে ৫০টি মোটরসাইকেলে সমাবেশের উদ্দেশ্যে রওনা হই। রংপুরে পরিচিতজনের বাড়িতে মোটরসাইকেল রেখে সমাবেশ প্রাঙ্গণে যোগ দেব।’
তিনি বলেন, ‘বাস বন্ধের কারণে রংপুরে যেতে সাধারণ মানুষকে কষ্ট পেতে হচ্ছে। তারপরও মানুষের স্রোত এখন রংপুরের দিকে, সড়কগুলো দেখলেই বোঝা যায়।’ বিএনপি নেতারা বলছেন, রংপুরের সমাবেশ সফল করতে নীলফামারীতে প্রস্তুতি সভা করেছে জেলা বিএনপি। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির উপদেষ্টা ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন।
ওই সভায় বলা হয়েছে, সমাবেশ ঘিরে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়াও সম্ভাবনা রয়েছে। তা বিবেচনায় নিয়ে সমাবেশ সফল করারও উদ্যোগ নেয় দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন।
যুবদলের নীলফামারী পৌর কমিটির সদস্য সচিব আবু সাইদ বাবু বলেন, ‘আমাদের অন্তত দেড় হাজার নেতা-কর্মী যাবে রংপুরের সমাবেশে। সেটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্নভাবে যাওয়াও শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা। শনিবার পর্যন্ত যাওয়া অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘যুবদলের জেলা, উপজেলা, পৌর এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও সমাবেশে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।’
রংপুরে সমাবেশ প্রাঙ্গণে থাকা বিভাগীয় মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা রঞ্জু বলেন, ‘সমাবেশ শনিবার। শুক্রবার সকাল থেকে দলে দলে মানুষ আসতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার রাতেও এসেছে। পরিবহন ধর্মঘট দেয়া হলেও মানুষের বাঁধভাঙা স্রোত মিলন মেলায় পরিণত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে শুধু বিএনপির নয়, সাধারণ মানুষের সভা হচ্ছে। মানুষ এই সরকারকে আর চাচ্ছে না। সেটা জানান দিতে অংশ নিচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, রংপুরের এই সভা ইতিহাস সৃষ্টি করবে।’
শুক্রবার বিকালে আন্তঃনগর তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম কালু ও সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমনের নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় দুই হাজার নেতা-কর্মী রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
ডোমার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমন বলেন, ‘কোন বাস বা মাইক্রোবাস আমাদের ভাড়া দিচ্ছে না। তারপরও সমাবেশ সফল করতে দুই হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে ট্রেনে রংপুর যাচ্ছি।’
উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম কালু বলেন, ‘আমরা সমাবেশের একদিন আগেই রংপুর যাচ্ছি। সরকার যতই বাধা দিক, এটা স্মরণকালের সমাবেশে পরিণত হবে।’
জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার বলেন, ‘রংপুরের সমাবেশে নীলফামারীর অন্তত দশ হাজার মানুষ অংশ নেবে। এরমধ্যে নেতা-কর্মী-সমর্থক এবং বিএনপিকে ভালোবাসেন এমন সাধারণ মানুষও রয়েছেন। উপস্থিতি আরও বেশি হতে পারে। শুক্রবার পাঁচ শ মোটরসাইকেলের বহর গেছে রংপুরে। দলে দলে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের ইন্ধনে বাস ধর্মঘট দিয়ে সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করা হলেও স্রোত থামাতে পারেনি। মানুষ এই সরকারকে আর চায় না। সে কারণে বাধা সত্ত্বেও মানুষ সমাবেশগুলোতে অংশ নিয়ে সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছে।’