রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে ঘিরে বিলবোর্ড লাগানোকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের বিলবোর্ডের ওপর বিএনপি নেতাদের বিলবোর্ড সাটানোর অভিযোগ উঠার পর পর শুক্রবারের মধ্যে সেগুলো সরানোর আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।
দুপুর ১২টায় বেতপট্টির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ১২ ঘণ্টার এই সময় বেঁধে দেয়া হয়।
এতে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিয়ার রহমান সাফি বলেন, ‘সরকারের উন্নয়ন, আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে অনেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিলবোর্ড লাগিয়েছে। সেই বিলবোর্ডের ওপর বিএনপি বিলবোর্ড লাগিয়েছে। এটা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। আমরা আমাদের রাজনৈতিক জীবনে কারও পোস্টারের ওপর কারও পোস্টার লাগানো দেখি নাই।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের লাগানো ওই বিলবোর্ড আজকের দিনের মধ্যে যদি সরিয়ে না নেয় তাহলে আমরাই সরিয়ে ফেলব। এ জন্য কোনো বিশৃঙ্খলা হলে তার দায় বিএনপির।’
তবে বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের সমাবেশ কাল, সেই সমাবেশে প্রোপাগান্ডা করার জন্য এসব করা হচ্ছে। কারও বিলবোর্ড সরানোর সময় আমাদের নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা সাফি বলেন, ‘বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের নামে পায়ে পা রেখে উসকানি ছড়িয়ে দিয়ে দেশের মধ্যে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়, মারামারি হানাহানি করতে চায়।
‘তারা লাশ ফেরার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। দীর্ঘদিন থেকে আমরা আশঙ্কা করছি যে, তারা দ্বন্দ্ব করতে চায়, রংপুরে শান্তিপর্ণ সমাবেশ করতে চায় না, তারই বহিঃপ্রকাশ এই বিলবোর্ড।’
তিনি বলেন, ‘তারা সমাবেশ করবে, আমাদের তাতে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু যেভাবে তারা আমাদেরকে উসকানি দেয়া শুরু করছে, তা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ কেউ সহজভাবে মেনে নেবে না।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘ওই বিলবোর্ড বঙ্গবন্ধুর ছবি আছে, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখা আছে। দিনের বেলায় বিএনপির এই বিলবোর্ড লাগানোর কোনো ক্ষমতা নেই, তারা রাতের বেলায় এই বিলবোর্ড লাগিয়েছে। সকাল বেলা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি কী বলছে
আওয়ামী লীগের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি এ জে ড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমি রাস্তায় আসতে দেখলাম শহরে মেয়র প্রার্থীসহ অনেকের বিলবোর্ড রয়েছে, জাতীয় পার্টির সমাবেশের বিলবোর্ড আছে, বিএনপির সমাবেশের বিলবোর্ড ব্যানার ফেস্টুনও আছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি কোনো হটকারী রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তারা শান্তিকামী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী অন্যের বিলবোর্ড সরানোর দায়িত্ব কেন নিবে। ওটা সিটি করপোরেশনের কাজ সেটা তারা করবে। আমাদের সমাবেশ কাল। সেই সমাবেশকে ঘিরে প্রোপাগন্ডা করার জন্য এসব করা হচ্ছে।’
রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজার রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিলবোর্ড বিএনপি নিজে সরিয়েছে। এখন কোনো সমস্যা নেই।’
তবে তিনি এই বক্তব্য রাখার পরও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিলবোর্ডের ওপর বিএনপির বিলবোর্ড সাঁটানো ছিল।