বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রংপুরের মালিকদের ডাকে বাস বন্ধ বগুড়ায়ও

  •    
  • ২৮ অক্টোবর, ২০২২ ১৪:৪৫

বগুড়া পরিবহন নেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ধর্মঘট ডাকিনি। তবে রংপুর থেকে বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে। আমরা তাদের কথা মেনে বন্ধ রেখেছি। এটা যদি আমাদের ধর্মঘট হতো, তাহলে তারাও আমাদের কথা রাখত।’

বিএনপির রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের এক দিন আগে সেখানে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। রংপুরের বাস মালিকদের ডাকে সাড়া দিয়ে শুক্রবার সকালে রাজশাহী বিভাগের জেলা বগুড়া থেকে রংপুর রুটের সব বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বগুড়া বাস, মিনিবাস, কোচ পরিবহন মালিক সমিতি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী সাধারণ।

বাস চলাচল বন্ধের বিষয়টি শুক্রবার নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। তার ভাষ্য, রংপুর বিভাগের পরিবহন নেতাদের কথায় রংপুর রুটে বাস বন্ধ রেখেছেন তারা।

বগুড়া পরিবহন সংগঠন সূত্র জানায়, বগুড়া থেকে রংপুর বিভাগের ১০টি রুটে চলাচলকারী অন্তত ২০০টি বাস বন্ধ রয়েছে। আর সারাদিন দেশের বিভিন্ন জেলার অন্তত দুই হাজার বাস, কোচ বগুড়া হয়ে রংপুর বিভাগে যায়। সেগুলোও চলাচল বন্ধ রেখেছে।

বগুড়ার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, বগুড়া থেকে রংপুর বিভাগের রুটগুলোর বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে অন্য সব রুটে চলাচল করছে। স্বাভাবিক আছে ট্রাক চলাচলও।

বাস বন্ধকে কেন্দ্র করে যাত্রীদের অভিযোগ, গন্তব্যের আগেই বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন হেলপাররা। সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী থেকে আসা একটি বাস থেকে চারমাথা স্ট্যান্ডে যাত্রীদের নামিয়ে দেন হেলপার। হেলপার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রংপুরে ধর্মঘট। এ জন্য বাস আর যাবে না।’

ওই বাসের যাত্রী আল আমিনের গন্তব্য গাইবান্ধা সদর। বলেন, ‘নামার কথা ছিল গোবিন্দগঞ্জ। কিন্তু এখন বগুড়ায় নামতে হচ্ছে। রংপুরে বলে বিএনপির সমাবেশ হবে, এ জন্য আমাদের বাস বন্ধ করে দিছে।’

নামিয়ে দেয়া যাত্রীদের দেখে যাওয়ার সময় আরেক বাসের হেলপার তাদের ডাকতে থাকেন। তারা রংপুরের ভাড়া হাঁকেন ২৫০ টাকা। দুইজন যাত্রী লাফ দিয়ে উঠেও পড়েন। ভাড়া এত বেশি কেন প্রশ্ন করতেই বাসটি দ্রুত চলে যায়।

বাসে উঠতে গিয়ে ফিরে আসা মমিনুল ইসলাম নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বলেন, ‘রংপুরের ভাড়া ১৭০ টাকা। কিন্তু আজ চাচ্ছে ২৫০ টাকা। এটা কোনো কথা!’

বাস কেন পাওয়া যাচ্ছে না কারণ শোনার পর মমিনুল বলেন, ‘তাহলে তো ঠিকই আছে। ছুতো পেয়েছে ভাড়া বাড়ায়ছে।’

চারমাথার ওই মোড়ে মহুয়া খাতুন নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, দিনাজপুরের রাণীগঞ্জ এলাকায় তার বাড়ি। সেখানে যাওয়ার জন্য অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু গাড়ি পাচ্ছেন না।

পরে মহুয়া সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়েন বাড়িতে যাওয়ার জন্য। এ সময় একটি বাসের হেলপার মহাস্থান পর্যন্ত যাওয়ার জন্য যাত্রীদের ডাকতে থাকেন। ভাড়া চান ৫০ টাকা। শরিফুল নামে একজন সবজির চারা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে ৪০ টাকায় ভাড়া মিটিয়ে বাসে উঠেন। কিন্তু এ দূরত্বের ভাড়া ২৫ টাকা।

কারণ জানতে চাইলে হেলপার বাবুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বাস দুইদিনের জন্য বন্ধ। মহাস্থানে আমাদের কাজ আছে এ জন্য যাচ্ছি। কেউ যেতে না চাইলে জোর করে নিয়ে যাব না।’

শহরের চারমাথা বাস টার্মিনাল ছাড়াও মাটিডালি বিমান মোড়ে অনেক যাত্রী বাসের অপেক্ষা করছিলেন। না পেয়ে অনেকেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা, হিউম্যান হলারে করে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। হিউম্যান হলারগুলো গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছে ৬০ টাকা। আর একই স্থানের সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। কিছু অটোরিকশা গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে যাচ্ছে, তার ভাড়া ১৫০ টাকা।

মাটিডালী এলাকায় অটোরিকশাচালক লিটন বলেন, ‘করোনায় লকডাউনে আমরা পলাশবাড়ী পর্যন্ত ১৫০ টাকা ভাড়ায় গিয়েছি। আজকে বাস বন্ধ থাকায় ওইদিক ভাড়া খাটছি। আগের রেট ধরে ভাড়া নিচ্ছি ১৫০ টাকা।’

বগুড়া বাস, মিনিবাস, কোচ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত আমাদের বাস যেতে পারবে। শুধু রংপুর বিভাগে আমরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি। যেহেতু তারা ধর্মঘট ডেকেছেন, এমন অবস্থায় গাড়ি আমরা পাঠাতে পারি না। এ জন্য সকাল থেকে কোনো বাস রংপুরে যায়নি। অন্য রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা ধর্মঘট ডাকিনি। তবে রংপুর থেকে বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে। আমরা তাদের কথা মেনে বন্ধ রেখেছি। এটা যদি আমাদের ধর্মঘট হতো, তাহলে তারাও আমাদের কথা রাখত।’

একইভাবে শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর রুটে রাজশাহী, নীলফামারী থেকেও বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল। পরিবহন মালিকরা এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রংপুর পরিবহন মালিকরা বাস বন্ধ রাখতে বলেছে, তাই এমনটা করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর