বিভাগীয় সমাবেশে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতি নিয়ে উচ্ছ্বসিত বিএনপিকে দেখিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের দিন ক্ষমতাসীন দলের দলের ঢাকা জেলার যে সম্মেলন, তাতে ব্যাপক লোক সমাগমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
সম্মেলনের আগের দিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জনসমাগম কাকে বলে তা আগামীকাল বিএনপিকে বুঝিয়ে দেয়া হবে।’
শুক্রবার ঢাকায় সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংয়ে একথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা।
শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে সাবেক বাণিজ্যমেলার মাঠে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সম্মেলন হবে। এই ধরনের সম্মেলনগুলোতে অন্যান্য বছর উপস্থিতি নিয়ে তেমন একটি আলোচনা হয় না।
তবে গত ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে এবং ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির বড় ধরনের সমাবেশ করার পর দলটির নেতারা যে বক্তব্য রাখছেন, তাতে আওয়ামী লীগও তার জেলা সম্মেলনগুলোতে জনউপস্থিতি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
গত ২৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন সেখানে ব্যাপক জনসমাগম হয়। সেই সম্মেলন এক পর্যায়ে জনসভায় রূপান্তর হয়ে যায়।
এক সপ্তাহ পর ক্ষমতাসীন দলের ঢাকা জেলা সম্মেলনের দিন রংপুরে হবে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে নেতা-কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে
বিএনপির তিনটা সমাবেশ দেখেই সরকারের কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে বলে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য রেখেছেন, তার জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে সরকারের কাঁপাকাঁপির কী আছে? কোনো কোনো সমাবেশে ১০ লাখের টার্গেট করেও এক লাখ হয়নি, আবার কোথাও পাঁচ লাখ টার্গেট করেও এক লাখেরও অর্ধেকও হয়নি। এটাই তো বিএনপির সমাবেশের চেহারা।’
কী নিয়ে খেলা হবে?
বিএনপির সঙ্গে ‘খেলা হবে’ বলে যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটিরও ব্যাখ্যা দেন তিনি। বলেন, ‘যারা ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে বলেছি। খেলা হবে হাওয়া ভবন, লুটপাট, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে, খেলা হবে দুর্নীতি, বিদ্যুৎবিহীন খাম্বার বিরুদ্ধে। সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার সৃষ্টিকারী, ভোট চুরি আর জালিয়াতির বিরুদ্ধে খেলা হবে।
‘খেলা হবে দেশের উন্নয়নবিরোধীদের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির লালন ও পালনকারীদের বিরুদ্ধে, খেলা হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে না তাদের বিরুদ্ধে।’
নিরপেক্ষতার মানদণ্ড কী
নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা না দিলে কোনো নির্বাচন হবে না বলে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য নিয়ে কাদের বিএনপিকে বলেন, ‘আপনাদের দৃষ্টিতে নিরপেক্ষতার মানদণ্ড কী? সেটার প্রমাণ তো আপনারা ক্ষমতাসীন হয়ে বারবার দেখিয়েছেন।
‘বিএনপির নেত্রীই তো এক সময় বলেছিলেন পাগল আর শিশু ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ নয়, তাহলে আপনারা কি পাগল ও শিশু দ্বারা পরিচালিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চান?’
বিএনপির দাবি পূরণ হওয়ার নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘এ দেশে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন রয়েছে, যার অধীনে যথাসময়ে আগামী নির্বাচন হবে। সরকার শুধু নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেবে। নির্বাচন কোনো ব্যক্তি বিশেষ বা কোনো দলের খেয়ালখুশি মতো হবে না। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, একইভাবে বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।’