রংপুরে শনিবার বিএনপির গণসমাবেশের আগে শুক্রবার সকাল থেকে কার্যকর হয়েছে ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন। এতে দূরপাল্লা এবং আন্ত বিভাগের যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। বাসস্ট্যান্ড, টার্মিনালে গিয়েও বাস বা অন্য যান না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন অনেকে।
অনেকে অল্প দূরত্বে যেতে রিকশা বা অটোরিকশার ওপর নির্ভর করলেই বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের। তবে দূরে যাওয়ার কোনো বাহন পাচ্ছেন না কেউই।
শুক্রবার সকালে রংপুরের বিভিন্ন বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
আরজিনা নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আমার বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে। সকালে অটোরিকশায় এসেছি মডার্নে। গার্মেন্টসে চাকরি করি, যেতে হবে সেখানে, কিন্তু বাস বন্ধ। যাইতে পারলে যাব, না পারলে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। কিন্তু চাকরি নিয়ে সমস্যা।’
রংপুরের গংগাচড়ার লালন কায়সার বলেন, ‘আমি ঢাকায় জব করি। সকালে অটোরিকশা করে কোচস্ট্যান্ডে আসছি, দেখি সব বন্ধ; বাসের কেউ নাই। গেলাম মডার্ন মোড়ে, সেখানেও কোনো গাড়ি নাই।
তিনি বলেন, ‘বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জব করি। তিন দিন ছুটি ছিল, সেই ছুটি আজ শেষ, কাল অফিস করতে হবে। বেসরকারি চাকরি করি, সময়মতো যেতে না পারলে চাকরি থাকবে কি না জানি না।’
রবিউল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে এসেছি ছোট বোনের বাড়িতে। সকালে বাসে যাব ভাবছিলাম, স্ট্যান্ডে এসে শুনি বাস চলবে না। এখন আবার ফিরে যেতে হচ্ছে।’
রংপুরের ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসিন্দা আল হাসান বলেন, ‘এটা কোন কথা। মানুষকে এভাবে কষ্ট দেয়া ঠিক না। ধর্মঘট হবে আমরা তো জানি না, আমাকে ঢাকা যেতেই হবে। এসে দেখি বাস নাই, এখন কী করব জানি না’
ঢাকা থেকে রংপুরে এসেছেন মো. সেলিম। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে রংপুর মেডিক্যালে পড়ে, তাকে নিতে এসেছি। সকালে বাস থেকে নেমেই শুনি সব পরিবহন বন্ধ। এখন তাকে নিয়ে কোথায় যাব। খুব বিপদে পড়ে গেছি। ঢাকা তো আর কাছে নয় যে হেঁটে চলে যাওয়া যাবে।
রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামু বলেন, ‘কোনো ধর্মঘটই গণসমাবেশকে আটকাতে পারবে না, সাধারণ মানুষ বিএনপিকে সাপোর্ট করছে। কিন্তু এই সরকারি ধর্মঘটে সাধারণ মানুষকে যেভাবে কষ্ট এবং দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।