বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নুরুল হত্যা: সাবেক এসপি-ওসির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

  •    
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ২২:০৯

চট্টগ্রামে এই হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ৫ বছর পর করা আবেদনে অভিযুক্তরা হলেন- চট্টগ্রামের সাবেক এসপি ও বর্তমানে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা, রাউজান থানার সাবেক ওসি কেফায়েত উল্লাহ এবং এসআই শেখ মো. জাবেদ।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাড়ে ৫ বছর পর চট্টগ্রামের সাবেক এসপিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শুনানি শেষে মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছে চট্টগ্রাম জেলার দায়রা জজ আদালত।

চট্টগ্রামের আলোচিত নুরু হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ৫ বছর পর দুপুরে জেলার দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁইয়ার আদালতে এই নালিশি মামলার আবেদন করেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমান লিটু।

অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তা হলেন- চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) ও বর্তমানে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা, রাউজান থানার সাবেক ওসি কেফায়েত উল্লাহ এবং উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ মো. জাবেদ।

মামলার আবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ রাত পৌনে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানার চন্দনপুরার বাসা থেকে নুরুকে গ্রেপ্তার করেন রাউজান থানার নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁডির তৎকালীন ইনচার্জ শেখ মো. জাবেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা। তারা সেখান থেকে তাকে রাউজানের নোয়াপাড়া কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে যান।

গ্রেপ্তারের সময় নুরুলের স্ত্রী সুমী আক্তার পরোয়ানা দেখতে চাইলে পরোয়ানা দেখাতে বাধ্য নয় বলে জানায় পুলিশ। ঘটনার সময় বাড়িতে উপস্থিত সুমীর ভাগ্নে মো. রাশেদুল ইসলাম নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাবেদকে চিনতে পারেন। পুলিশ নুরুলের পরিবারের সদস্যদের হুমকি-ধমকি দিয়ে বাসার তিনটি মোবাইল ফোনসহ নুরুলকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় সুমী ও রাশেদুল পুলিশের পেছন পেছন গিয়ে চট্ট মেট্রো-চ-১১-৩১৭৭ নম্বরের সাদা রংয়ের মাইক্রোবাস দেখতে পান।

মামলায় আরও বলা হয়, নুরুলের আত্মীয় স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা থানায় খোঁজ নিয়ে নুরুলের অবস্থান সম্পর্কে জানতে ব্যর্থ হন। পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নুরুলের এক বন্ধু এসআই জাবেদের মোবাইলে কল দিয়ে নুরুলকে থানায় সোপর্দ করার অনুরোধ করলে তিনি গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্বীকার করেন। বলেন, ‘হ্যাঁ, এ ব্যাপারে আরও কয়েকজন ফোন করেছে। আমি বিষয়টি ওসি স্যারকে বলেছি, নুরুলকে ধরা হয়েছে।’

এক পর্যায়ে সুমি জানতে পারেন, বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর তাকে রাত ৩টায় নোয়াপাড়া কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে তার চোখ, মুখ ও হাত বেঁধে নির্যাতন করা হয়। পরে কোনো এক সময় তাকে গুলি করে হত্যার পর বাগওয়ান ইউনিয়নের খেলারঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীরে মরদেহ ফেলে দেয় পুলিশ। পরদিন স্থানীয় লোকজনের কাছে জেনে আত্মীয়-স্বজন ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন। এইদিন বিকেলে রাউজান থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ৩১ মার্চ নুরুলের মরদেহ দাফন করা হয়।

মামলার আবেদনের বিষয়ে বাদীর আইনজীবী মাহফুজার রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসামিরা সে সময় চট্টগ্রাম জেলায় কর্মরত থাকায় ভয়ে এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কারণে মামলা করা যায়নি। এখন বাদী মিজানুর রহমান খোঁজ নিয়ে জানলেন, আসামিরা চট্টগ্রাম জেলায় আর নেই। তাই মামলাটির আবেদন করেছেন। মামলার শুনানি হয়েছে, আদালত এটি আদেশের জন্য রেখেছেন।’

মামলার বাদী কৃষকদল নেতা মিজানুর রহমান বলেন, ‘নিহতের পরিবারের লোকজন মামলা করতে অক্ষম। তারা সহযোগিতা চাওয়ায় আমি বাদী হয়ে মামলাটি করেছি। দলের মধ্যে আমি আইনি বিষয়গুলো দেখি।’

অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, "এটা বহুদিন আগের ঘটনা, আমার তো মুখস্থ নেই। তো বিষয়টা জানার পর আমি খোঁজ-খবর নিলাম। সেই সময়কার যে ওসি, আমি তাকে ফোন করেছি। তিনি বললেন, ‘আমি কিছু জানি না, পাবলিকে খবর দিছে, আমরা মরদেহ উদ্ধার করে মামলা নিছি। এই মামলা আবার পিবিআই তদন্ত করছে। তদন্ত করে রিপোর্ট দিছে।’ এই হলো বিষয়।"

তবে তখনকার সেই মামলার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

মামলার আবেদন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে নুরে আলম মিনা বলেন, ‘এটা পুলিশ সুপারের কোনো বিষয় না। একটা ঘটনা কোথাও ঘটলে লোকাল থানা দেখে। তার ওপরে সার্কেল এসপি আছেন, এডিশনাল এসপি আছেন, তারা দেখেন। পুলিশ সুপার তো থানায় গিয়ে কাজ করে না।

‘যাই হোক, পলিটিকাল বিষয় তো, আমার ধারণা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাজটা করছে। মামলা করেছে, কোর্টের বিষয়। যে কোনো লোকই তো কোর্টে যেতে পারে। কোর্টে যেহেতু গেছে, কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে। আমি যতটুকু জানি, বিষয়টা সঠিক না।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপ-পরিদর্শক শেখ মো. জাবেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ বিভাগের আরো খবর