বাংলাদেশের মতো এত অল্প সময়ে বিশ্বের অন্য কোনো দেশ ডিজিটালাইজড হয়নি বলে দাবি করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই দাবি করেন।
বেসরকারি ব্যাংক ইবিএলের উদ্যোগে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে স্টার্টআপদের ঋণ ও ফ্রিল্যান্সারদের বিশেষ কার্ড কো ব্র্যান্ডে এর উদ্বোধন করা হয় অনুষ্ঠানে।
ক্রেডিট, ডেবিট, এবং প্রি-পেইড এই তিন ধরনের কার্ড ইস্যু করা হবে। কার্ডগুলোতে বিশেষ কিছু সুবিধা অফার করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে প্রথম বছরে ‘জিরো’ ইস্যু ফি, ১৮টি লেনদেনের ক্ষেত্রে নবায়ন ফি না থাকা, দুটি সাপ্লিমেন্টারি কার্ড ইত্যাদি। দেশে ও বিদেশে এই কার্ডগুলো ব্যবহার করা যাবে।
স্টার্টআপদের জন্য যে ঋণ দেয়া হবে, তার নাম রাখা হয়েছে ‘স্টার্টআপ এক্সপ্লোরার।’
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যারা কাজ করছেন তাদের জন্য ‘ইবিএল ফ্রিডম ফ্রিল্যান্সার ভিসা ডেবিট কার্ড’ অফার করছে ইস্টার্ন ব্যাংক। এই কার্ড ব্যবহারের ফলে ফ্রিল্যান্সারদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবস্থাপনা অনেক বেশি সহজ ও কার্যকর হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে এবং বাংলাদেশকে ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করার জন্য তার দূরদর্শী চিন্তাধারা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
‘বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আর কোনো দেশ এত অল্প সময়ের মধ্যে ডিজিটালাইজড হয়নি।’
২০০৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ যে ইশতেহার দেয়, তাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করা হয়। গত এক যুগে বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে, তবে ইন্টারনেটের গতি নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন। আবার সরকারি ওয়েবসাইটগুলোতে আপডেট তথ্য পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ আছে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ এবং নতুন উদ্ভাবনী ধারণার জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হয়ে উঠছে যা স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে রূপান্তরিত করছে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা অনুসারে, বাংলাদেশে বর্তমানে ১২০০ টিরও বেশি সক্রিয় স্টার্টআপ রয়েছে এবং প্রতি বছর ২০০টি নতুন স্টার্টআপ ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ দিচ্ছে। এই ক্রমবর্ধমান সংখ্যক স্টার্টআপগুলো আমাদের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করছে।
‘প্রতি বছর আমাদের দেশের মধ্যম ও উচ্চ-মধ্য আয়ের মাধ্যম থেকে হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েট এই স্টার্টআপগুলোতে তাদের কর্মজীবন শুরু করছে। হাতেকলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের পর, তারা উদ্যোক্তা হিসাবে বিকশিত হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে ঢাকায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, ‘স্টার্টআপগুলো সমাজে চেঞ্জমেকার এবং প্রভাবকের ভূমিকা পালন করে। একটি কর্মচঞ্চল উদ্যোক্তা ইকোসিস্টেম তৈরির স্বার্থে সরকারি এবং বেসরকারি খাতের একযোগে কাজ করা প্রয়োজন।’
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামী আহমেদ বলেন, ‘স্টার্টআপ শিল্পে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এ কারণেই স্টার্টআপ বাংলাদেশে লিমিটেড উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রদান এবং টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের একটি স্টার্টআপ হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে।
‘এখানেই ইস্টার্ন ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের মিল রয়েছে। তারাও বাংলাদেশে স্টার্টআপের উন্নয়নের লক্ষ্যে কো-ব্র্যান্ড ব্যাংকিং প্রোডাক্ট চালুর মাধ্যমে নবীন স্টার্টআপদের সহযোগিতা করছে।’
ইবিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ‘ইবিএল ইনোভেশন এবং টেকনোলজিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তাই যারা বা যেসব সংস্থা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে সহযোগিতাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’