বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নতুন জঙ্গি সংগঠন: যোগ দিতে ঘরছাড়া ৭০-৮০ যুবক

  •    
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ১৮:২৭

২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ জন যুবককে নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য করা হয়েছে। সংগঠনের উদ্দেশ্য পাহাড়ে শক্ত অবস্থান তৈরি, নিরাপদ সামরিক ট্রেনিং, দেশে নাশকতা সৃষ্টির মাধ্যমে উগ্রবাদী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করা।

২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ যুবক বাড়ি ছেড়েছেন। তারা নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার হয়ে এ কাজ করেছেন। এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে পাঁচ জঙ্গি গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। বলেন, এই সংগঠনের উদ্দেশ্য মূলত জঙ্গিবাদের জন্য সদস্য রিক্রুট, অর্থ সংগ্রহ, সশস্ত্র সামরিক ট্রেনিং, আধুনিক অস্ত্র ক্রয়সহ বিশাল জঙ্গি বাহিনী গঠন করা।

উদ্দেশ্য পূরণে তারা দেশব্যাপী ২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ জন যুবককে এই সংগঠনের সদস্য করেছেন।

সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল পাহাড়ে তাদের শক্ত অবস্থান তৈরি, নিরাপদ সামরিক ট্রেনিং, সংগঠনের উগ্রবাদী উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে দেশে নাশকতা সৃষ্টির মাধ্যমে উগ্রবাদী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আবার নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে যাওয়া।

এর আগে উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আসনার হিন্দাল শারক্কিয়ার ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানান তিনি। বলেন, বুধবার রাতে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন আব্দুল্লাহ, মো. তাজুল ইসলাম, মো. জিয়াউদ্দিন, মো. হাবিবুল্লাহ ও মাহমুদুল হাসান। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন এবং ফতোয়া-সংক্রান্ত ১২ পাতা কাগজ জব্দ করা হয়।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: নিউজবাংলা

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সম্পর্কে সিটিটিসি প্রধান জানান, তারা সবাই নব্য উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কিয়ার সক্রিয় সদস্য। মো. হাবিবুবুল্লাহ ও মো. মাহামুদুল হাসান এই সংগঠনের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে কথিত জিহাদের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য কথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে নিজ নিজ বাসা ত্যাগ করেন। আবদুল্লাহ, তাজুল ইসলাম ও জিয়াউদ্দিন সংগঠনের সদস্য হিসেবে কথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগ করা নতুন সদস্যদের সাময়িক বাসস্থান ও প্রাথমিক ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতেন।

অন্যরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ‘হিজরত করা’ তরুণদের সংগ্রহ করে আব্দুল্লাহর বাসায় নিয়ে যেতেন। তাদের উগ্রবাদী ধারণায় উদ্বুদ্ধ করতেন। পরে তাদের প্রশিক্ষণে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেন।

আসাদুজ্জামান আরও বলেন, সম্প্রতি কুমিল্লা জেলা থেকে সাতজন তরুণ নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হলে সিটিটিসি ছায়াতদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লা থেকে হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হওয়া আবরারুল হককে শনাক্ত করে মগবাজার এলাকা থেকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়।

আবরারুল হকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশব্যাপী নিখোঁজের চাঞ্চল্যকর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সংগঠনের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় জঙ্গি ডাক্তার শাকির বিন ওয়ালীর বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। পরে রামপুরার হাজিপাড়া এলাকা থেকে ডাক্তার শাকির বিন ওয়ালীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সংগঠনের দাওয়াতি বিভাগে কাজ করতেন এবং পাহাড়ে সামরিক প্রশিক্ষণের সময় কোনো জঙ্গি সদস্য অসুস্থ হলে তার চিকিৎসা করতেন। কোনো সদস্য হামলার শিকার হলে প্রাথমিক চিকিৎসা কীভাবে করতে হবে সে বিষয়েও প্রশিক্ষণ দিতেন। সমতলে থাকাকালে জঙ্গি সদস্য প্রশিক্ষণ গ্রহণের সময় অসুস্থ হলে তার সঙ্গে গোপন চ্যাটে আলাপ করে চিকিৎসা নিতেন।

ডাক্তার শাকির বিন ওয়ালী পাহাড়ি ক্যাম্পে এক মাসের বেশি অবস্থান করেন। মাসে একবার তিনি পাহাড়ি ক্যাম্প পরিদর্শন করতেন। ক্যাম্পে তিন ভাগে প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। প্রথম ভাগে পাহাড়ের ক্যাম্পে শারীরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। দ্বিতীয় ভাগে যুদ্ধ কৌশল, যেখানে ডামি অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। তৃতীয় ধাপে পেট্রলিং শেখানো হতো। ট্রেনিং ক্যাম্পটিতে শামিন মাহফুজের পাশাপাশি তমাল, রনবীর, রাকিব, ডাক্তার শাকির বিন ওয়ালী যাতায়াত করতেন এবং সার্বিক বিষয় তদারকি করতেন। ক্যাম্প থেকে কেউ ফিরে আসতে চাইলে তারা তাদের হাত, পা, চোখ বেঁধে বন্দি করে রাখতেন বলে জানান মো. আসাদুজ্জামান।

এ বিভাগের আরো খবর