বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপির রংপুরের সমাবেশ ঘিরেও বাস ধর্মঘট?

  •    
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ১৪:০৫

আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির সমাবেশের দিন ও তার আগের দিন বাস ধর্মঘটের ঘোষণা এসেছে। সেখানকার মালিক পক্ষ যে দাবিতে এই কর্মসূচি ডেকেছে, সেই একই দাবিতে সন্ধ্যায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে রংপুরের বাস মালিক সমিতি। আগামী শনিবার বিভাগীয় শহরটিতে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে এই বৈঠকে ধর্মঘটের ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বরিশালে বিএনপির সমাবেশের দিন যে দাবিতে বাস মালিকরা ধর্মঘট ডেকেছে, সেই একই দাবি নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে রংপুরের বাস মালিক সমিতি।

২৯ অক্টোবর বিএনপির রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে আগে এই বৈঠক নিয়ে আলোচনা এই কারণে যে এর আগে ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ এবং ২২ অক্টোবর খুলনার মালিক সমিতিও বাস ধর্মঘট ডেকেছিল নানা দাবিতে।

সর্ব উত্তরের বিভাগটিতে সমাবেশের দুই দিন আগে বৃহস্পতিবার রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি এ কে এম মোজাম্মেল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি বন্ধে একটা দাবিদাওয়া আছে। আজ সন্ধ্যায় মালিক সমিতির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

'আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির সমাবেশের ১০ দিন আগে ২৬ অক্টোবর জেলার পরিবহন মালিকরা জানিয়ে দিয়েছেন আগামী ৪ ও ৫ নভেম্বর তারা ধর্মঘট করবেন। এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে রংপুরের মালিকরা যে বিষয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন, সেই একই বিষয়টি জানানো হয়েছে।'

আপনারাও কি ধর্মঘট ডাকতে যাচ্ছেন- জানতে চাইলে রংপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এম এ মজিদ বলেন, ‘ধর্মঘট নিয়ে এখনও কোনো আলোচনা নেই। এই বিষয়টা আমি জানি না। আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’

বিএনপি নেতাদের আশঙ্কা তারা রংপুরেও পরিবহন ধর্মঘটের মুখে পড়তে যাচ্ছেন। তবে এতেও যেকোনো উপায়ে গণসমাবেশ সফল হবে। দলের নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ উপায়ে মাঠে অবস্থান করবেন।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে। ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ ও ২২ অক্টোবর খুলনায় সমাবেশ করেছে দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ অক্টোবর রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে চতুর্থ গণসমাবেশের ঘোষণা রয়েছে তাদের।

এর মধ্যে চট্টগ্রামের সমাবেশটি নির্বিঘ্নে হলেও ময়মনসিংহ ও খুলনার সমাবেশের আগে ধর্মঘট ডাকেন বাস মালিকেরা। বরিশালের ৫ নভেম্বরের সমাবেশের আগেও ধর্মঘটের ঘোষণা এসেছে ইতোমধ্যে। সমাবেশের আগের দিন শুরু হবে ৪৮ ঘণ্টার এই ধর্মঘট।

বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেছিলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও অবৈধভাবে এসব যানবাহন চলছে মহাসড়কে। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় থ্রি-হুইলারের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।

‘যাত্রীসাধারণের নির্বিঘ্নে ও নিরাপদ যাতায়াতের লক্ষ্যে ৩ নভেম্বরের মধ্যে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ না করা হলে ৪ থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকে আঞ্চলিক, দূরপাল্লারসহ সব ধরনের বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ থাকবে।’

এসব ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বরাবরই অভিযোগ করে আসছেন, সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতেই সরকারের প্ররোচনায় এসব ধর্মঘট ডাকা হচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সরকার পক্ষ বলছে, বিএনপির অতীতের নানা কর্মসূচিতে বাসে আগুন ও ভাঙচুরের ভয়ে মালিকরা বাস বন্ধ রাখছেন, এতে সরকারের হাত নেই।

সমাবেশের আগে ধর্মঘটের এসব অভিজ্ঞতা থেকেই এবারও আগাম প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন রংপুর বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সর্ববৃহৎ জনসমাগম করার টার্গেটও তাদের।

রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে আমরা প্রস্তুত। এ জন্য গত ৬ অক্টোবর থেকে রংপুর বিভাগের সব জেলা, উপজেলায় আমরা বৈঠক করেছি, সভা করেছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এর আগের তিনটি বিভাগীয় সমাবেশে সরকার বাধা দিয়েও গণসমাবেশে গণজোয়ার ঠেকাতে পারেনি, রংপুরেও পারবে না। আমরা সমাবেশ সফল করব, আমাদের নেতা-কর্মী-সমর্থক সবাই এখন ২৯ অক্টোবরের দিকে তাকিয়ে।’

রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, সরকারের পক্ষ থেকে বাধা আসতে পারে। কারণ এর আগেও সেটা হয়েছে। যদি বাধা আসে আশা করছি মানুষজন হেঁটে, সাইকেলে, বাইসাইকেলে, ভ্যানে করে হলেও সমাবেশে এসে যোগ দেবেন। সমাবেশের আগের দিন থেকেই নেতা-কর্মীরা রংপুরমুখী হবে।’

বিএনপি যখন সরকারে ছিল, তখন ২০০৫ ও ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নানা কর্মসূচির আগেও এভাবে বাস বন্ধ হয়ে যেত, গণগ্রেপ্তার ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের সমাবেশে আসা ঠেকাতে হামলাও ছিল এক নিয়মিত ঘটনা। দেড় যুগ পরও বাস বন্ধের এই রীতি রয়ে গেছে।

সে সময় আওয়ামী লীগের নেতারা যেসব অভিযোগ করতেন, এখন বিএনপির নেতারা সেসব কথা বলছেন।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) আবু মারুফ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বিএনপির এই প্রোগ্রাম নিয়ে কোনো বাধা দিচ্ছি না। তবে অবজার্ভ করছি, গোয়েন্দা তৎপরতা রয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে বা পজিটিভ পেলে আজ সন্ধ্যায় সমাবেশের অনুমতির কাগজ তাদের দেয়া হবে।

‘তবে, রাজনৈতিক এই সমাবেশকে ঘিরে অন্য কোনো পরিকল্পনা থাকলে আমরা কঠোর হস্তে সেটি দমন করব, আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিভাগের আরো খবর