ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেয়া শিশু ফাতেমাকে দেয়া টাকার বিষয়ে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককে এ রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিশু ফাতেমার কল্যাণের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশে ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়। সেই টাকা ওই শিশুর কল্যাণে ব্যয় না করে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক শিশুটির পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে জমা রেখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য হলো এই টাকা দেয়া হয়েছে এই শিশুর কল্যাণে ব্যয় করার জন্য। সেটা না করে যদি তা ব্যাংকে রেখে দেয়া হয়, ১৮ বছর পর এই টাকার মূল্য কী হবে? তা ছাড়া সে সময় এই টাকা ওই শিশুর জীবনে যতটা না কাজে আসবে তার থেকে এখন টাকাটা বেশি প্রয়োজন। এ কারণে বিষয়টি আমরা আদালতের নজরে আনি। আদালত শুনানি শেষে ময়মনসিংহের ডিসিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।’
গত ২৯ আগস্ট শিশুটির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দেয় সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড।
শিশুটির পরিবারকে গত ৭ আগস্ট এক মাসের মধ্যে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশের পর ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সেই চেক হস্তান্তর করা হয়।
চলতি বছরের ১৯ জুলাই জন্ম নেয়া শিশুটিকে দেখাশোনার জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তিন মাসের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এ কমিটি গঠন করতে বলা হয়।
একই সঙ্গে নবজাতকের পরিবারকে আপাতত ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। ১৫ দিনের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডকে এ টাকা দিতে বলা হয়। পাশাপাশি শিশু ও তার পরিবারকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত।
শিশুটির ১৮ বছর পর্যন্ত যাবতীয় খরচ রাষ্ট্রকে বহনের নির্দেশনা চেয়ে গত ১৮ জুলাই হাইকোর্টে রিট করা হয়। আইনজীবী কানিজ ফাতেমা তুনাজ্জিনার পক্ষে ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন এ রিট করেন।
চলতি বছরের ১৬ জুলাই ত্রিশাল পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ওই দুর্ঘটনায় ত্রিশালের রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী রত্না বেগম এবং মেয়ে সানজিদা খাতুন মারা যায়। মৃত্যুর আগে রত্নার গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় নবজাতক। পরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে নেয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।