পলি বেগমের সন্তান ছিল তিনজন। দ্বিতীয় ছেলের জন্মের পর তিনি কোনো একসময় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এর মধ্যে জন্ম হয় ছোট ছেলের। বিভিন্ন সময় ছোট ছেলেটিকে তিনি হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। পরিবার ও আশপাশের লোকজন তার মানসিক ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি জানতেন। তাকে নজরেও রাখা হতো।
এরই মধ্যে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ৩ মাস ১০ দিনের শিশু জুবায়ের আহম্মেদকে তিনি হত্যা করেন। তার বিরুদ্ধে সে সময় মামলা দেন স্বামী সগির হোসেন তালুকদার। সেই মামলার রায় হয়েছে বুধবার সকালে। মানসিক ভারসাম্যহীন প্রমাণিত হওয়ায় পলিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক।
এ ঘটনা বরিশালের গৌরনদী বার্থী ইউনিয়নের।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা বুধবার সকালে এই রায় দেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কামরুল।
এজাহার থেকে জানা গেছে, সগিরের সঙ্গে ১৬ বছরের সংসার ছিল পলির। তাদের তিন ছেলে ছিল। সবচেয়ে ছোট জুবায়ের আহম্মেদের জন্ম ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। এর আগে থেকেই পলি অসংলগ্ন আচরণ করতেন।
অভিযোগে বাদী সগির জানান, জুবায়েরের জন্মের পর পলি আরও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময় জুবায়েরকে হত্যার চেষ্টাও করেন। এলাকার লোকজনদের বলতেন যে বড় দুই ছেলেকে হত্যার জন্য জুবায়েরের জন্ম হয়েছে। পলির এসব আচরণের কারণে পরিবারের লোকজন তাকে নজরে রাখতেন।
এজাহারে সগির জানান, ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাতে পলি ও ছোট ছেলে জুবায়ের তার সঙ্গেই ঘুমিয়ে ছিলেন। মাঝরাতে তিনি মা-ছেলেকে পাশে না পেয়ে খুঁজতে বের হন। একপর্যায়ে গোয়ালঘরের বালতির পানিতে জুবায়েরকে মৃত অবস্থায় পান। তবে পলিকে কোথাও পাওয়া যায়নি। পরে তিনি পলির নামে গৌরনদী মডেল থানায় মামলা করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল খালেক মনা রায়ের পর জানান, পলিকে পরে পুলিশ মাদারীপুরে তার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তিনি কারাগারে আছেন। তার মানসিক ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি আদালতে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এই রায় দেন।