৮ মাসের সন্তানকে বালিশচাপায় হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মায়ের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বুধবার দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আনিছুর রহমান এই দণ্ডাদেশ দেশ। একই সঙ্গে ওই মাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন তিনি।
দণ্ডপ্রাপ্ত ২৭ বছর বয়সী হামিদা আক্তারের বাবার বাড়ি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার দোহসুও এলাকায়। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ায় তিনি সেখানেই থাকতেন।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল ৮ মাস বয়সী সন্তান ইমরান আলীকে হত্যার অভিযোগে আটোয়ারী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন শিশুটির চাচা মজনু মিয়া।
মামলার বাদী মজনু মিয়ার বাড়ি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার লতিফগছ এলাকায়। তার ছোট ভাই আতারুল ইসলামের সঙ্গে যখন হামিদার বিচ্ছেদ ঘটে তখন ইমরানের বয়স ৮ মাস।
আইন অনুযায়ী, বিচ্ছেদের পর শিশুটি মায়ের কাছে থাকবে এমন শর্তে হামিদা আক্তার ইমরানকে নিয়ে দোহসুও গ্রামে বাবার বাড়িতে ওঠেন। বিচ্ছেদের পর সেখানে অবস্থানের মাত্র ৪ দিনের মাথায় ইমরানকে হত্যা করা হয়।
বাদী মজনু হক বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে হামিদার বিচ্ছেদের ৪ দিন পর খবর পাই আমার ভাতিজা মারা গেছে। পরে আমি পরিচিত কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে ছুটে যাই। সেখানকার স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানতে পারি, ইমরানকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করি।’
এদিকে, মামলা করার পর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনার পরপরই হামিদা ও তার মাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য আদালতে প্রতিবেদন আকারে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালত প্রধান আসামি হামিদাকে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এই মামলার অপর দুই আসামি হামিদার মা ও বাবাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’