আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি বা বিডিপি নামে একটি দলের নিবন্ধন আবেদন করা নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন আলোচনা।
নিবন্ধনের আবেদন জমা দিতে আসা ব্যক্তিরা নিজেদের পরিচয় নিয়ে লুকোচুরি করেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। পরে দলের বিষয়ে তথ্য জানাতে চাননি। বলেছেন, পরে বিস্তারিত জানাবেন।
বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের দলটির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম চাঁনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ইসিতে আবেদন জমা দেয়। তারা দলীয় নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে চেয়েছে আনারস।
তবে আনোয়ারুল প্রথমে দাবি করেন, তিনি বিডিপির কেউ না। ব্যক্তিগত কাজে এসেছেন। পরে আধা ঘণ্টা পর দেখা যায় তিনিই দলটির সভাপতি।
নিজেদের নতুন রাজনৈতিক দল দাবি করে বিস্তারিত কিছুই আপাতত বলতে চাননি তিনি। বলেন, ‘আমরা বিডিপির নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধনের যতগুলো শর্ত আছে সবকিছু পূরণ করেই আবেদন জমা দিতে এসেছি। আশা করি আমরা ইসিতে নিবন্ধিত হব এবং আমরা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত হব।’
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামী নেতারাই দলটি গঠন করেছেন।
নিজের পরিচয়ের পাশাপাশি এই বিষয়ে এক প্রশ্নেও ধোঁয়াশায় রাখেন আনোয়ারুল। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে নতুন প্রজন্মের যারা, তারা আছেন। আমরা ইনশাআল্লাহ আরেকটু অর্গানাইজড হয়ে আপনাদের সঙ্গে দলের উদ্দেশ্য, আদর্শ সবকিছু নিয়ে বিস্তারিত কথা বলব।’
গণমাধ্যমের সেই প্রতিবেদনে আনোয়ারুলকে ডেমর থানা জামায়াতের সাবেক আমির বলে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি ডেমরা চিনিই না।’
জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে কি না- জানতে চাইলে বিডিপি সভাপতি বলেন, ‘ভুল কথা অনেকেই বলতে পারেন। এটা একটা নতুন দল। আমার সঙ্গে যারা আছেন তারা নতুন প্রজন্মের। বিভিন্নভাবে তাদের সংগ্রহ করছি। এখানে কারও কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি বা সহিযোগিতা ফিল করি না। এখন কেউ যদি কিছু বলে, আমরা এজন্য দায়ী নয়।
‘বিনীতভাবে আপনাদের কাছে আবেদন, বিস্তারিতভাবে আমরা বলব। আমরা সম্পূর্ণ নতুন একটা দল। জামায়াতের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা নাই।’
দলটি কবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে এবং আদর্শ বা উদ্দেশ্য কী- জানতে চাইলে বিডিপি নেতা বলেন, ‘পরবর্তীতে আমরা বিস্তারিত জানাব। এখন কিছুই বলতে চাচ্ছি না। আমি সবই আপনাদের বলব।’
জাতির পিতা, বাংলাদেশ সংবিধান মানেন কি-না, এমন প্রশ্নে আনোয়ারুল বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান মেনেই আমরা রাজনীতিতে এসেছি। সংবিধানের প্রতিটি শব্দকেই আমরা সম্মান করি এবং সেটাকে লালন করেই আমরা রাজনীতি করি।
‘বঙ্গবন্ধু তো জাতির পিতা। আমরা বাংলাদেশের সংবিধানের বাইরে যেতে রাজি না। আমাদের গঠনতন্ত্র দেখলে বুঝবেন। আর এখানে মুক্তিযুদ্ধে পর জন্ম নেয়া বিভিন্ন জায়গায় উদ্যোক্তা যারা আছেন, তাদের নিয়েই দল গঠন করা হয়েছে।’
যুদ্ধাপরাধী কেউ দলে আছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিডিপি সভাপতি বলেন, 'স্বাধীনতার পরে জন্মগ্রহণ করেছে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম। যুদ্ধাপরাধী বানাইলে বানাইতে পারেন। আমরা এসব বিষয়ে যাব কেন? আমরা একটা রাজনৈতিক দল। ইনশাআল্লাহ সামনে সকল কিছু পরিষ্কার হবে।
‘আমরা নিবন্ধনের জন্য এসেছি। নিবন্ধনের যতগুলো রিকয়ারমেন্ট আছে সবগুলো ফুলফিল করে জমা দিয়েছি। প্রায় ৫০ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট এনেছি।’
আাগামী ৩০ অক্টোবর নতুন দল নিবন্ধনের আবেদন জমা দেয়ার সময় শেষ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় দুই ডজন নতুন দল নিবন্ধন পেতে ইসিতে আবেদন দিয়েছে।