বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের ১০ দিন আগেই বাস ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়া হলো বরিশালে। সমাবেশের আগের দিন শুরু হবে ৪৮ ঘণ্টার এই ধর্মঘট। কারণ হিসেবে সামনে আনা হয়েছে মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন বন্ধের দাবি।
জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও অবৈধভাবে এসব যানবাহন চলছে মহাসড়কে। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় থ্রি হুইলারের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।
‘যাত্রী সাধারণের নির্বিঘ্নে ও নিরাপদ যাতায়াতের লক্ষ্যে ৩ নভেম্বরের মধ্যে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধ না করা হলে ৪ নভেম্বর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকে আঞ্চলিক, দূরপাল্লারসহ সব ধরনের বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ থাকবে।’
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নানা দাবিতে বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে যে সমাবেশের ডাক দিয়েছে, তাতে বরিশালের কর্মসূচিটি হবে ৫ নভেম্বর।
এর আগে ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ ও ২২ অক্টোবর খুলনায় সমাবেশ করে তারা।
এর মধ্যে চট্টগ্রামের সমাবেশটি নির্বিঘ্নে হলেও ময়মনসিংহ ও খুলনার সমাবেশের আগে ধর্মঘট ডাকেন বাস মালিকরা। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতেই সরকারের প্ররোচনায় এটা করা হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বিএনপির অতীতের নানা কর্মসূচিতে বাসে আগুন ও ভাঙচুরের ভয়ে মালিকরা বাস বন্ধ রাখছেন, এতে সরকারের হাত নেই।
বিএনপি যখন সরকারে ছিল, তখন ২০০৫ ও ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নানা কর্মসূচির আগেও এভাবে বাস বন্ধ হয়ে যেত, গণগ্রেপ্তার ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের সমাবেশে আসা ঠেকাতে হামলাও ছিল এক নিয়মিত ঘটনা। দেড় যুগ পরও বাস বন্ধের এই রীতি রয়ে গেছে।
সে সময় আওয়ামী লীগের নেতারা যেসব অভিযোগ করতেন, এখন বিএনপির নেতারা সেসব কথা বলছেন।
বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশ কীভাবে বানচাল করা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে সব দিক থেকে। কেন তাদের ৪ ও ৫ নভেম্বর বাস বন্ধ রাখতে হবে? ৫ নভেম্বর বিএনপির সমাবেশে যাতে কেউ আসতে না পারে সেদিকে নজর রেখেই এসব ষড়যন্ত্র।’
বিএনপির সমাবেশের কথা ‘জানে না’ বাস মালিক সমিতি
বরিশালে বাস ধর্মঘটের সিদ্ধান্তের সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের সম্পর্ক নেই বলে দাবি করছে মালিক সমিতি। সমিতির নেতা কিশোর কুমার দে এও বলেছেন, ‘বিএনপি সমাবেশ করছে কি না বা কবে করছে সেটা আমরা কিছুই জানি না।
‘থ্রি হুইলার বন্ধের দাবি ও বাস ধর্মঘটের বিষয়টি আরও সাত দিন আগে থেকে মিটিং চলছে। আমাদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই।’
তিনি জানান, থ্রি হুইলার চলাচল ও রুট পারমিটহীন বাস বন্ধের দাবিতে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।