সিত্রাং এর প্রভাবে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে শরীয়তপুরের ৬ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে।
বাতাসের তীব্রতায় মাটির সঙ্গে নুয়ে পড়ায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমনের ক্ষেত। তলিয়েছে শীতকালীন আগাম সবজি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টিতে ৫ হাজার ৬৬২ হেক্টর জমির রোপা ও বোনা আমন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বোনা আমন ২ হাজার ২০০ হেক্টর ও রোপা আমন ৩ হাজার ৪৬২ হেক্টর। তলিয়ে গেছে ৬০২ হেক্টর জমির শাক-সবজি, ৪২২ হেক্টর জমির মরিচ, পান ৫০, মাসকালাই ১৯, পেঁয়াজ ১৫ ও অন্যান্য ফসল ৭৬ হেক্টর।
জাজিরা ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ঝড় হবে বুঝতে পেরেছিলাম, তবে এত বৃষ্টি বৃষ্টি হবে বুঝতে পারিনি।অনেক জমিতে ধান, পেঁয়াজ ও মরিচের আবাদ করেছিলাম। পানিতে প্রায় সব ফসলই তলিয়ে গিয়েছে। আজকের মধ্যে পানি না নামলে সব ফসলই নষ্ট হয়ে যাবে।
‘সকাল থেকে মানুষ নিয়ে পানি নিষ্কাশনে কাজ করছি। ফসল নষ্ট হয়ে গেলে কিস্তির টাকা দেব কীভাবে? আর নিজেরাই চলব কী করে?’
বিলাসপুর ইউনিয়নের মেহের আলী মাদবর কান্দি গ্রামের মো. মাহফুজ বলেন, ‘অনেক আশা নিয়া এবার প্রথমবারের মতো টমেটো লাগাইছিলাম, কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে সব শ্যাষ হইয়া গেল। গোড়ায় পানি জমে থাকায় সব গাছ মইরা যাইতাছে। এছাড়াও যেসব গাছ একটু বড় হয়ছে, সেগুলো মাটিতে নুয়ে পড়ছে। এখন মনে হচ্ছে টমেটো লাগানোর খরচই উঠবে না আমার।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান বলেন, ‘আগে থেকেই কৃষকদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা থাকায় কৃষক ভাইদের ২৮ তারিখের আগে নতুন ফসল না বুনতে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।
‘ঝড়ের কারণে কিছু ফসলের মাঠ আক্রান্ত হয়েছে। আপাতত কৃষকদের দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পানি দ্রুত নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। আক্রান্ত জমির মধ্যে কি পরিমান ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নিরূপনে কাজ শুরু হয়েছে।’