ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে ভারি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে মাদারীপুরের নিম্নাঞ্চলের জমি। পানিতে নষ্ট হয়েছে উঠতি আমন ধানসহ নানা ফসল।
জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এখনও ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়েছে।
গেল দুদিন মাদারীপুরে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। জেলা সদরের দুধখালীর বলষা, পলাশপুর, কালিকাপুর, কুনিয়া, পাচঁখোলা, ছিলারচরসহ অন্তত ৮টি ইউনিয়নের প্রায় সব আমন ক্ষেতই পানিতে তলিয়েছে।
শিবচর উপজেলার নদীবেষ্টিত চরজানাজাত, কাঠালবাড়ী, সন্নাসীরচরসহ নিম্নামাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
দুধখালি ইউনিয়নের পলাশপুর গ্রামের কৃষক লিটন খান বলেন, ‘এবার উঠতি রোপা আমন ধান ৬৩ শতাংশের ৫ বিঘা জমিতে রোপন করেছি। হঠাৎ এ ঘূর্ণিঝড়ে আমার সব ধানই তলিয়ে গেছে। লাখের বেশি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রতি শতাংশে অন্তত আধা মন ধান হতো, এখন কিছুই ঘরে তুলতে পারবো না।
‘এ পানি কবে নামবে আর কবে ধান তুলব, কিছুই নেয়া যাবে না। সব পঁচে শেষ হয়ে যাবে।’
আরেক কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পানির যে অবস্থা, কোনো দিক দিয়েই পানি বের হতে পারছে না। যে কারণে ধানের আশা নাই। আর ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যেই ধান কাটা যেত, এখন আর সম্ভব না।
‘কৃষি অফিস যদি আমাদের দিকে নজর দিতো, তাহলে আগামীতে যে ইরি ধান লাগাব, সেখানে একটু সহযোগিতা পেতাম। প্রকৃত কৃষক কিছু পায় না। যা পায় মেম্বার-চেয়ারম্যানরা নিজেদের লোকদের দেয়।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তররের উপ-পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘এবার রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৪ হেক্টরে, আর আগাম শাক-সবজি চাষ হয়েছিল ৬৫০ হেক্টরে। যার ৮০ শতাংশই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে।
‘তবে রোদ উঠলে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। তাছাড়া আমরা প্রতিটি ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের দায়িত্ব দিয়েছি। সুনির্দিষ্ট পরিমান আরও দুই তিন দিনের মধ্যে দিতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক কলা বাগানের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া নিম্নামাঞ্চলের অন্যান্য ফসলেও ক্ষতির আশঙ্কা আছে।’