দিনাজপুর সদর উপজেলায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কালীপূজা উপলক্ষে স্থাপিত একটি প্রতিমায় ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার চেহেলগাজী ইউনিয়নে উত্তর গোবিন্দপুর শ্মশান কালীমন্দিরে এই ঘটনাটি ঘটে। এর প্রতিবাদে রাতেই স্থানীয় অর্ধশত সনাতন ধর্মাবলম্বী দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন।
রাত ১২টা থেকে শুরু হয়ে ওই অবরোধ চলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত। পরে কোতোয়ালি থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উত্তম রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের শান্ত করে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
এ ছাড়া অভিযান চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুরে জড়িত সন্দেহে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। এরা হলেন মো. রকি, বেলাল, তুষার ও রাশেদ।
স্থানীয়দের অভিযোগ চেহেলগাজী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জীবন কুমার রায় জগবন্ধুর নির্দেশে স্থানীয় সবুজ ও কালী রায় উত্তর গোবিন্দপুর শ্মশান কালীমন্দিরে জুয়ার আসর বসান।
বিষয়টি জানতে পেরে বড়ইল গ্রামের মো. রাজু মোবাইল ফোনে সবুজ ও কালী রায়ের কাছে পিকনিকের জন্য ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে রাজু ও তার সঙ্গে আরও ৮-১০ জন মন্দিরে গেলে তাদের ৩ হাজার টাকা দেয়া হয়। কিন্তু রাজু ও তার সঙ্গীরা আরও ২ হাজার টাকার জন্য গো ধরে থাকেন।
এ নিয়ে পরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে যায়। এ সময় ভয়ে পূজা অর্চনার দায়িত্বে থাকা লোকজনও পালিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর মন্দিরের কালী প্রতিমাটি মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরে রানীগঞ্জ মোড়ে গিয়ে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
মঙ্গলবার পূজা পরিদর্শনে এসে বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে চারজনকে পুলিশ আটক করেছে। অন্যদের আটক করতেও অভিযান চলছে।
এ বিষয়ে জানতে উত্তর গোবিন্দপুর শ্মশান কালীমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমল রায়কে ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ছাড়া ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জীবন কুমার রায় জগবন্ধুকে ফোন করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে বিষয়টি নিয়ে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উত্তম রায় বলেন, ‘এই ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছে।’
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর মন্দিরে গিয়ে তারা কালীমূর্তিটি উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে মন্দিরের লোকজনের সহযোগিতায় এটিকে আবারও আসনে বসানো হয়।
এ ঘটনায় মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।