বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৫ মিনিটের পথে আড়াই ঘণ্টা পার

  •    
  • ২৫ অক্টোবর, ২০২২ ১৮:৫৬

জিএমপি এর টঙ্গী জোনের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়েজ বলেন, ‘একদিকে রাস্তায় বিআরটি প্রকল্পের কাজ, অন্যদিকে বৃষ্টি। আর এ কারণেই যানজট তীব্রতর হচ্ছে।’

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাব পড়েছে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও। সোমবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টিপাতে মহাসড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। এসব খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে বিঘ্ন ঘটছে যান চলাচলে।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই দিনভর গাজীপুরের বড়বাড়ি থেকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কে ছিল যানজট। অন্যদিকে ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথে বিমানবন্দর থেকে টঙ্গীর মিলগেট পর্যন্ত ছিল যানজটের পরিধি।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উভয়মুখী যানজট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এতে দূর্ভোগে পড়েন এ পথে চলাচলকারী যাত্রী ও যানবাহনের চালকরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে খানাখন্দে পড়ে বিকল হয়ে পড়েছে বেশকিছু ভারি যানবাহন। এসব যানবাহন সরিয়ে নিতে সময় লাগায় আরও দীর্ঘ হয় জ্যামে পড়া গাড়ির সারি।

যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামীরা। বৃষ্টির কারণে গণপরিবহন সংকটে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে। দীর্ঘসময় পর খালি ট্রাক ও পিকআপ পেলেই হুড়োহুড়ি করে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন অনেকেই।

অনেকেই আবার হেঁটেই রওনা হন গন্তব্যে। তবে কাদা ও ভাঙাচোরা সড়কে হেঁটে যেতেও বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছে তাদের। সবমিলিয়ে সারাদিনই দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রী, পরিবহন চালক ও পথচারীদের।

অনেকে গাড়ি থেকে নেমে কাদামাখা পথে হেঁটেই রওনা হন

পরিবহনচালক এনামুল হক জানান, গাজীপুরা থেকে চেরাগআলি আসতেই তার আড়াই ঘণ্টা সময় লেগেছে। অথচ এইটুকু পথ পার হতে সময় লাগার কথা মাত্র ৫ মিনিট।

ক্ষোভ প্রকাশ করে পথচারী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘একদিন-দুদিন না, গত ১০ বছর ধরে এ মহাসড়কে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ ভোগান্তি কি শেষ হবে না কোনদিন? উন্নয়নের নামে আমাদেরকে বিরাট আশা দিয়ে ভোগান্তির মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। এর চেয়ে আমাদের আগের রাস্তাই ভালো ছিল।’

টঙ্গীর সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সামিউল হক বলেন, ‘দুপুর ১টায় মডেল টেস্ট পরীক্ষা। কিন্তু যানজটের কারণে সকাল ১০টায় কলেজগেটের বাসা থেকে বের হয়েছি। এখন যানজটে গাড়ি থেমে থাকায় কাদাপানি মাড়িয়ে অনেক কষ্ট করে যেতে হচ্ছে।’

অনেকেই আবার গাড়িতে বসে বিরক্তি প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, রাস্তায় হেঁটে বা অন্য কোনো মাধ্যমে যাওয়ার উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়েই বসে থাকতে হচ্ছে।

বৃদ্ধ ও শিশুদের দুর্ভোগও ছিল চোখে পড়ার মতো।

ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে খিলক্ষেত-উত্তরা হয়ে গাজীপুরমুখী যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এ সড়ক ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জিএমপি এর টঙ্গী জোনের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়েজ বলেন, ‘একদিকে রাস্তায় বিআরটি প্রকল্পের কাজ, অন্যদিকে বৃষ্টি। আর এ কারণেই যানজট তীব্রতর হচ্ছে। মিলগেইট এলাকায় সংস্কার কাজ করায় বিকেল থেকে ময়মনসিংহমুখী লেনে গাড়ি চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ঢাকামুখী লেনের অবস্থা ভয়াবহ। সেখানে বিকেলের পর ইট-বালি দিয়ে সাময়িক উপযোগী করার জন্য সংস্কারকাজও চলছে।’

খানাখন্দ মেরামতের চেষ্টা

স্থানীয়রা জানান, আগের রাতে টানা বৃষ্টির কারণে মিলগেটসহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানের খানাখন্দ বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়াও মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় পানিও জমে ছিল।

জিএমপি এর উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কিছু জায়গায় উভয়মুখী যানবাহন এক লেনে ধীর গতিতে চলাচল করছে। তাই মহাসড়ক ব্যবহারকারী যাত্রীদেরকে হাতে সময় নিয়ে বাইরে বের হতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘খানাখন্দ সংস্কারের বিষয়ে বিআরটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। টঙ্গী অংশে ফ্লাইওভারের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা নিচের সড়কে স্থায়ী কাজ করবেনা বলে জানিয়েছে। এ কারণে ইট-বালি দিয়ে সাময়িক সংস্কার কাজ করা হলেও সামান্য বৃষ্টি ও ভারি যানবাহনের চাকার ঘর্ষণে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।’

নাগরিকদের দূর্ভোগের বিষয়টি মাথায় নিয়ে ট্রাফিক বিভাগ সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর