বিএনপি ভবিষ্যৎমুখী নয়, বরং পশ্চাৎমুখী রাজনৈতিক দল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী জানান, মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভাতের অধিকারের জন্য যখন আওয়ামী লীগ আন্দোলন করেছিল, বিএনপি তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু তারা এখন আবার সেই ব্যবস্থা চাচ্ছে, যা পশ্চাৎমুখী।
সোমবার সচিবালয়ে তার দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন চলেছিল, তখন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শিশু আর পাগল ছাড়া নিরপেক্ষ কেউ নন, কিন্তু বিএনপি নেতারা এখন এ কথা কেন বলেন না?'
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করেছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, এখন তাদের কেন এ পশ্চাদযাত্রা। আসলে অন্ধ বিরোধিতাই বিএনপির একমাত্র হাতিয়ার।
ওবায়দুল কাদের জানান, বিএনপি এমন একটি দল যাদের নেতাদের মুখে মধু, অন্তরে বিষ। তাদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি, কিন্তু চর্চায় লুটপাট আর সুবিধাবাদ। বিএনপি স্বাধীনতার কথা বলে, কিন্তু লালন ও পোষণ করে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি আর পৃষ্ঠপোষকতা করে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে।
ওবায়দুল কাদের আরও জানান, বিএনপি ভোটাধিকারের কথা বলে অথচ ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন আর সোয়া এক কোটির বেশি ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করেছিল। তাই তাদের মুখে মুখে কথামালার মধু ছড়ালেও অন্তরে বিধ্বংসী বিষবাষ্প।
ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং'-এ ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলীয় নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে শেখ হাসিনা সরকার আছে এবং থাকবে।
তিনি জানান, বিএনপির টেকব্যাক মানে আবারও বিদ্যুৎবিহীন খাম্বা, তাদের টেকব্যাক মানে আবারও গ্রেনেড হামলার মতো ষড়যন্ত্র। তাদের টেকব্যাক হচ্ছে আগুন সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আস্ফালন। বিএনপির টেকব্যাক মানে আবারও হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবন। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ টেকব্যাকের নামে আর সেই অন্ধকারে ফিরে যাবে না।
শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক জানান, বিএনপি নেতারা বিদ্যুৎ এবং রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে কোন মুখে? তাদের কি বিন্দুমাত্র লাজশরম নেই? যারা দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছিল, যাদের শাসনামলে দিনের পর দিন লোডশেডিং চলত, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না, তারা আজ বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে কোন মুখে?
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের স্মরণ করে দিয়ে জানান, বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়ে প্রতারণার কথা জনগণ এখনও ভুলে যায়নি, ভুলে যায়নি বিদ্যুতের দাবিতে মিছিলে গুলির কথা, হারিকেন-কুপি নিয়ে বিক্ষোভের কথা এবং বিদ্যুৎ ভবন ঘেরাও করার কথা।
ওবায়দুল কাদের জানান, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার কোনো ঘাটতি নেই, ঘাটতি হচ্ছে জ্বালানি সংকট নিয়ে, আর এই সংকট শুধু বাংলাদেশে নয়, এ সংকট বিশ্বব্যাপী। এই সংকট আগে তো ছিল না, সরকার দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছিল, তবে জ্বালানির সংকট সমাধানে এখনও সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা রয়েছে।
তিনি জানান, বিএনপি নেতারা বিশ্ব পরিস্থিতি অনুধাবন না করে শুধু সরকারের অন্ধ সমালোচনায় ব্যস্ত। তারা রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে। ৪ বিলিয়নের কিছু বেশি ছিল বিএনপির আমলে রিজার্ভের পরিমাণ। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ দেখেছে দেশবাসী। বর্তমানে যা প্রায় ৩৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার।
তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘আপনাদের সময়ে রেখে যাওয়া ৪ বিলিয়নের কিছু বেশি রিজার্ভের সাথে এখনকার রিজার্ভের সংখ্যাটা মিলিয়ে নিন। তারপর না হয় রিজার্ভ নিয়ে কথা বলুন।’