সপ্তাহ দু’য়েক পর আগাম আবাদ করা আমন ধান কেটে ঘরে তুলবেন, এই অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু এর আগেই এ ধান নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মেহেরপুরের কৃষকরা। ঘূর্ণিঝড়ের সিত্রাংয়ের প্রভাবে জেলার বিভিন্ন এলাকার পাকা ও আধাপাকা ধান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছেন, ৬০ থেকে ৭০ ভাগ পাকা আমন ক্ষেতে ক্ষতি মোটামুটি হলেও যেসব আমনের শিষ বের হচ্ছে, এসবের গাছের ফলন কিছুই পাওয়া যাবে না।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। ঝড়ে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে- তা নিরূপণে মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে।
সোমবার বিকেল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। সন্ধ্যায় বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো বাতাস। থেমে থেমে চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। এতে নুয়ে পড়েছে আমন গাছ। এই ক্ষতি সদর ও মুজিবনগরে কিছুটা হলেও গাংনী উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশি।
তিন বিঘা জমিতে আমন করেছেন গাংনী উপজেলার ঝোড়াঘাট গ্রামের কৃষক ফারুক আহমেদ। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় সেচ বেশি লেগেছে। বিঘায় আমার ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। ধান বেশ ভালো হয়েছিল। আর ১০-১২ দিন পর থেকে ধান কাটা পড়ত। কিন্তু এখন ঝড় আর বাতাসে সব গাছ একেবারে মাটি সমান হয়ে গেছে। ধানের ক্ষতি হয়েছে।’
একই গ্রামের চাষি ফরিদ হোসেন বলেন, ‘বেশিরভাগ জমির ধান গাছ পড়ে গেছে। পাকা ধানে ক্ষতি কম হলেও থোড় (শিষ) ধানে বেশি ক্ষতি হবে। পাকা যেগুলো পড়েছে তাতে অর্ধেক ক্ষতি হবে।’
দেবীপুর গ্রামের চাষি লালন হোসেনের বর্ণনায়, ‘রাতে যে ঝড় হয়েছে এতে এই জমির সব ধান বিছানার মতো পড়ে আছে। জমিতে ফলন যা হতো, এখন অনেক কম হবে। যে জমিগুলোতে শিষ বের হচ্ছে সেই গাছও পড়ে গেছে। এগুলো সব চিটা হয়ে যাবে।’
জেলা কৃষি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামসুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলক হয়েছে। পেকে যাওয়া আমন ধানের তেমন একটা ক্ষতি হবে না। তবে যেসব ধানের শিষ বের হওয়া শুরু হয়েছে, সেগুলোর উৎপাদন কমে যাবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখন বলা যাবে না। তা নিরূপণে মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে।’