ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বাংলাদেশ আঘাতের পর স্থলভাগ দিয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি মঙ্গলবার সকাল নাগাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ এলাকায় পৌঁছে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপর ক্রমে শক্তি হারাবে ঝড়টি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কামরুল হাসান রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপকূলে আঘাত করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ভোলার পাশ দিয়ে রাত ৯টার দিকে উপকূলে প্রবেশ করে ঝড়ের কেন্দ্র।
আবহাওয়াবিদ কামরুল হাসান নিউজবাংলাকে জানান, ঘূর্ণিঝড়ের পুরো অংশ রাত ১২টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করেছে।
তিনি বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দ্রুতগতির ঝড়। এ রকম সাধারণত দেখা যায় না। খুব দ্রুতগতিতে এটি উপকূলের দিকে ধেয়ে আসে। রাত ৯টার দিকে ঝড়ের কেন্দ্র ভোলার পাশ দিয়ে বরিশাল ও চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম শুরু করে। কেন্দ্রটি স্থলভাগে উঠে যাওয়ার ৩ ঘণ্টার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়টি (ঝড়ের পুরো ব্যাস) বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করেছে।’
ঝড়টির শক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝড়ের কয়েকটি মাত্রা থাকে। এটি ভারী কোনো ঘূর্ণিঝড় নয়, আবার মাঝারিও নয়। একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়।
‘এটিকে একটি সাধারণ ঝড় বলা যায়। সাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে এটি স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড় আকারে আঘাত করেছে।’
কামরুল হাসান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ কক্সবাজারে রেকর্ড করা হয়েছে ৭৪ কিলোমিটার। তবে এটা ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। মঙ্গলবার সকালের বুলেটিনে প্রকৃত তথ্যটি দেয়া যাবে।’
এর আগে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে সিত্রাংয়ের ‘সুপার সাইক্লোন’ হিসেবে আঘাত হানার আশঙ্কা জানানো হয়েছিল।
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বঙ্গোপসাগরে তৃতীয় সপ্তাহের দিকে সৃষ্ট লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এরপর সেটি সুপার সাইক্লোন হিসেবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার গতিতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
ব্যক্তিকেন্দ্রিক পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এমন আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে আবহাওয়া অধিদপ্তর সে সময় জানায়, চলতি মাসে সাগরে লঘুচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় তৈরির আশঙ্কা থাকলেও সেটি ‘সুপার সাইক্লোন’ হবে কি না তা এত আগে সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: এ মাসের মাঝামাঝিতেই কি সুপার সাইক্লোন ‘সিত্রাং’?
আমেরিকান টেকজায়ান্ট আইবিএম-এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান দ্য ওয়েদার চ্যানেলের ওয়েদার ডটকমে প্রকাশিত একটি নিবন্ধেও ঘূর্ণিঝড় তৈরির আগেই এভাবে পূর্বাভাস দেয়ার মডেলের সীমাবদ্ধতা নিয়ে সতর্ক করা হয়।
এই নিবন্ধে বলা হয়, ‘সরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানের দেয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসের মডেলের তথ্য এখন ইন্টারনেটে ব্যাপক সহজলভ্য। তার মানে এই নয় যে, এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় আগেই কোনো হারিকেনের উপকূলে আঘাতের পূর্বাভাস মডেল আপনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভালো ধারণা৷’