প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ‘প্রত্যক্ষ রাজনীতি না করেও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ব্যারিস্টার রফিক উল হকের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। ধর্ম-বর্ণ ও দল-মত নির্বিশেষে পরোপকার চর্চা তার জীবনকে করেছে বর্ণাঢ্যময়।’
সোমবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি অডিটরিয়ামে আদ দ্বীন ফাউন্ডেশন আয়োজিত প্রয়াত ব্যারিস্টার রফিক উল হকের স্মরণসভা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ব্যারিস্টার রফিক উল হক ছিলেন অত্যন্ত প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। তিনি কখনোই আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেননি। আইনজীবী হিসেবে তিনি কিছু অত্যাবশ্যকীয় নীতি মেনে চলতেন। তিনি কখনোই তার নীতি থেকে বিচ্যুত হননি।
‘যেকোনো পেশা বা বৃত্তিতে শুধু যোগ্যতা থাকলেই স্বকীয়তা আসে না। পেশার বাইরে তার জ্ঞানের পরিধি থাকতে হয়। রফিক উল হক একাধারে আইন, ইতিহাস, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে অগাধ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘একজন আদর্শ নীতিবান আইনজীবী হিসেবে ব্যারিস্টার রফিক উল হক আইন পেশাকে মহিমান্বিত করেছেন। ৮৫ বছর বয়সে তিনি এতোসব কাজ করেছেন যা ভাবতে অবাক লাগে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
‘তিনি সমাজকল্যাণমূলক অনেক কাজ করেছেন। ঢাকা শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে জমিপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য ভূমিকা ছিল তার। এছাড়া বারডেম হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় তিনি প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছেন। আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতাল ও আদ-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠায় তার অবদান চিরস্মরণীয়।
সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ব্যারিস্টার রফিক উল হক শুধু একজন আইনজীবীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। তার চেম্বার থেকে অসংখ্য খ্যাতিমান আইনজীবী তৈরি হয়েছেন, বিচারপতি হয়েছেন। পাশাপাশি মানব সেবায়ও তার ভূমিকা ছিল। হাসপাতালসহ বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়তে অর্থ সহায়তা করেছেন তিনি।
আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. শেখ মহি উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি নূরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বোরহান উদ্দিন ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
এছাড়া বক্তব্য দেন- সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, আদ-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুস সবুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ প্রমুখ।