ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং'। এমন খবরে আতঙ্কিত হলেও ঝালকাঠির নদীতীরের মানুষেরা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছেন না। ভিটেবাড়ি ও গবাদিপশু ছেড়ে যাবেন না বলে নিজ নিজ ঘরেই রয়েছেন সেখানকার বেশির ভাগ মানুষ।
জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. জোহর আলী বলেন, ‘জেলার ৪ উপজেলার ৬১টি স্থায়ী সাইক্লোন শেল্টার খুলে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ৪২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে।’
সংকেত বাড়ার কারণে সোমবার দিনের মধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার জন্য সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান এবং স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশ দিয়েছেন ডিসি।
তবে বাসিন্দাদের অনেকেই ঘর ছেড়ে যেতে চাইছেন না।
রাজাপুরের চর পালট গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব দিলরুবা বেগম বলেন, ‘মেয়ে-ছেলেদের বলেছি তিন নাতিকে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে। আমি ছাগল-গরু নিয়ে বাড়িতেই থাকব। মারা গেলে স্বামীর ভিটাতেই মরব।’
কাঠালিয়ার মুন্নুজান বেগম বলেন, ‘আগে একবার ঘূর্ণিঝড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গেছিলাম, দুই দিন পর এসে দেখি ঘরের জিনিসপত্র চোরে নিয়ে গেছে। তাই এবার যাব না। কিন্তু অনেক ভয় লাগছে। আল্লাহ ভরসা।’
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ইয়ুথ অ্যাকশন সোসাইটি, দেশরত্ন স্পোর্টিং ক্লাব ও পাঠাগারসহ অনেক সংগঠন সচেতনতায় মাইকিং ও মোম-ম্যাচের কাঠি বিতরণ করছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আজই আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হবে। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু গবাদিপশু নিরাপদে উঁচু স্থানে স্থানান্তর করেছি।’
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া মানুষদের বসতঘরের মালামাল যাতে লুণ্ঠিত না হয়, সেদিকে পুলিশ কড়া নজর রাখবে।’