দিনের বেলায় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার শপথ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটি সরকারের অবস্থান নয় বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এটি উপদেষ্টার ব্যক্তিগত বক্তব্য বলে জানিয়েছেন তিনি।
তৌফিকের বক্তব্য নিয়ে তুমুল আলোচনার জন্য সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন সরকারের এই মুখপাত্র।
মন্ত্রী বলেন, ‘তৌফিক-ই-ইলাহী সাহেব যেটা বলেছেন, এটি তার ব্যক্তিগত কথা। সরকার এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। তিনি কেন বলেছেন এটি তিনিই বলতে পারবেন।’
কী বলেছিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
রোববার রাজধানীতে জ্বালানি নিয়ে এক সেমিনারে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘সাশ্রয়ী হতে গিয়ে কষ্ট করতে হলে সবাইকে তা করতে হবে। সবাইকে তৈরি থাকতে হবে। বিদ্যুৎ ব্যবহার কম করব। দরকার হলে দিনের বেলা বিদ্যুৎ ব্যবহারই করব না। আমরা শপথ নেব দিনের বেলায় কেউ বিদ্যুৎ ব্যবহার করব না।’
তিনি বলেন, ‘এমনও দিন ছিল যখন রাতে আমরা বাতি দিয়ে থেকেছি। দিনের আলোয় সব কাজ করেছি। এত আরাম-আয়েশে থাকতে হবে কেন? একটু কম করলেই হয়।’
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার না করার অনুরোধও করেন তিনি। বলেন, ‘আমরা চাইলে এসি বন্ধ রাখতে পারি, বিদ্যুৎ ব্যবহার কমাতে পারি। সারা দেশে যে পরিমাণ এসি চলে, তাতেই ৫ থেকে ৬ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা আছে। আমরা এসি বন্ধ রাখব বা কম চালাব। এতে দুই-তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সেভ হবে। গ্যাস সাশ্রয় হবে।’
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার পরিকল্পনা প্রণয়ন থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত প্রতিটি ধাপেই তৌফিকের অংশগ্রহণ ছিল।
এই একটি দশকে বিদ্যুৎ খাত নিয়ে সরকার ছিল ফুরফুরে মেজাজে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে তরল গ্যাস বা এলএনজির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে এটি আমদানি না করার নীতি গ্রহণ করার পর থেকে বাতাস ঘুরে গেছে।
জ্বালানি সাশ্রয়ে গত জুলাই থেকে ঘটা করে লোডশেডিংয়ের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি শীতের আগে মারাত্মক দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ৪ অক্টোবর পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পর থেকে রাতেও ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে, যে কারণে জনমনে ক্ষোভ স্পষ্ট।